স্টক মার্কেটের গতিবিধি সম্পর্কে পূর্বাভাস দিতে পারে চ্যাটজিপিটি? কী বলছে গবেষণা?
সম্প্রতি স্টক মার্কেট বা শেয়ার বাজারের গতিবিধি সম্পর্কে পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির সম্ভাব্যতা মূল্যায়ন করেছেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের একদল অধ্যাপক।
সাম্প্রতিক ওই গবেষণায় সংবাদ শিরোনামের 'সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিসের' ওপর ভিত্তি করে স্টক মার্কেটের বিষয়ে চ্যাটজিপিটির দেওয়া পূর্বাভাস পরীক্ষা করে দেখেছেন গবেষকরা। তবে অনেক ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটি ঠিকঠাক পূর্বাভাস দিতে পারে বলে প্রমাণিত হলেও, গবেষণাটি এখনও অন্যান্য গবেষকদের দ্বারা পুর্নমূল্যায়ন হয়নি। দ্য ইকনোমিক টাইমসের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
সমীক্ষায় কোম্পানিগুলো সম্পর্কে ৫০ হাজারেরও বেশি সংবাদ শিরোনাম চ্যাটবটটিতে দেওয়া হয়; সেন্টিমেন্ট অ্যানালাইসিসের ভিত্তিতে শিরোনামগুলো কোম্পানির শেয়ার দরের ক্ষেত্রে ভাল বা মন্দ না-কি অপ্রাসঙ্গিক, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট স্কোর নির্ধারণ করে চ্যাটজিপিটি। পরে ওই স্কোরের সঙ্গে মেলানো হয় মার্কেটের গতিবিধি।
দেখা যায়, চ্যাটজিপিটির দেওয়া প্রতিক্রিয়া এবং স্টক মার্কেটের গতিবিধি অনেকটাই প্রাসঙ্গিক, যা কিছু ক্ষেত্রে রিটার্নের পূর্বাভাস দিতে পারে বলেও প্রমাণিত হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, যে কোম্পানিগুলোকে চ্যাটজিপিটি কম স্কোর দিয়েছিল সেগুলোর তুলনায় বেশি স্কোর দেওয়া কোম্পানিরগুলোর রিটার্নের পরিমাণ ছিল বেশি। সংবাদের শিরোনাম এবং সোশ্যাল মিডিয়ার তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে স্টক মার্কেটের পূর্বাভাস দেওয়ার চ্যাটজিপিটির এই সক্ষমতা নিয়ে আরও মূল্যায়ন চলছে। মিশিগান-ভিত্তিক বাজার ও ক্রিপ্টো ট্র্যাকিং সাইট বেনজিঙ্গার প্রতিবেদনেও এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, বিনিয়োগ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে চ্যাটজিপিটির মতো উন্নত ভাষার মডেলগুলোকে কাজে লাগানো গেলে তা আরও ফলপ্রসূ হতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, চ্যাটজিপিটির সেন্টিমেন্ট স্কোরের ওপর ভিত্তি করে যে পূর্বাভাস পাওয়া যায়, তা ট্রেডিশনাল মডেলগুলি থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাসের তুলনায় খুব বেশি ব্যতিক্রম নয়। এ কারণে গবেষকরা বলছেন, চ্যাটজিপিটি ভবিষ্যতে স্টক মার্কেটের গতিবিধির পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এটি বিনিয়োগকারীদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও সাহায্যে করতে পারে।
ইকনোমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাম্প্রতিক আরেকটি গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের কোনো ঘোষণা অর্থ বাজারের জন্য কী অর্থ বহন করে তা বোঝায়ও চ্যাটজিপিটির সক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয়েছে।
ওই সমীক্ষায় দেখা গেছে, পেশাদাররা যখন চ্যাটজিপিটি মডেলগুলো ভালোভাবে টিউন করে ব্যবহার করেন, তখন সেগুলো অন্যান্য মেশিন লার্নিং মডেলের তুলনায় 'ফেডস্পিক' বিশ্লেষণ এবং বোঝার ক্ষেত্রে আরও নির্ভুলভাবে কাজ করে।
গবেষকদের মতে, নীতি পরিবর্তনের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষণাগুলো অর্থ বাজারের জন্য কী অর্থ বহন করে তা বুঝতে ও মূল্যায়ন করতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ভবিষ্যতে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এটি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতেও সাহায্য করবে।