মাঝপথেই খুলে ফেললেন বিমানের দরজা! আটক অভিযুক্ত যাত্রী
আজ দক্ষিণ কোরিয়ার দেগু শহরে অবতরণের সময় এশিয়ানা এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের দরজা খুলে ফেলার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। খবর বিবিসির।
শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় সময় দুপুর প্রায় ১১টা বেজে ৪৫ মিনিটে এয়ারবাস এ৩২১-২০০ জেটটি দেশটির জেজু দ্বীপ থেকে যাত্রা শুরু করে। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর দেগু শহরে অবতরণের সময় ভূমি থেকে ২৫০ মিটার উপরে থাকা অবস্থায়ই বিমানের দরজা খুলে ফেলেন এক যাত্রী।
ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, ৩০ বছর বয়সী ওই ব্যক্তিকে অবতরণের সময় গ্রেপ্তার করা হয়।
তবে বিমানটি দেগু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে দরজা খোলা অবস্থায়ই নিরাপদে অবতরণ করে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এশিয়ানা এয়ারলাইন্স জানায়, বিমানে ১৯৪ জন যাত্রী সহ মোট ২০০ জন ছিলেন। যাত্রীদের মধ্যে স্কুল শিক্ষার্থীরাও ছিল।
নিরাপদে অবতরণ সম্ভব হলেও দরজা খোলা অবস্থায় বিমানটি উড়তে থাকায় আতঙ্কিত হয়ে কিছু যাত্রী অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাছাড়া, অনেকেরই শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
দেগু ফায়ার ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে, হাইপারভেন্টিলেশনে ১২ জন কিছুটা আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে নয়জনকে দেগু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি কেন এমনটি করলেন তা এখনও জানা যায়নি। এমনকি আটকের সময় তিনি মদ্যপও ছিলেন না।
একজন কর্মকর্তা বলেন, "তার সঙ্গে স্বাভাবিক কথোপকথন করা দুরূহ হয়ে পড়েছে। আমরা তার এই অপরাধের উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত করব এবং সে অনুযায়ী তাকে শাস্তি দেব।"
ইতোমধ্যেই এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনই এক ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানের খোলা দরজা দিয়ে তীব্র গতিতে বাতাস ভেতরে প্রবেশ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানায়, লোকটি দরজা খোলার পর বিমান থেকে লাফ দেওয়ার চেষ্টাও করে।
৪৪ বছর বয়সী এক যাত্রী ইয়োনহাপকে বলেন, "একদিকে দরজার কাছে থাকা যাত্রীরা অজ্ঞান হয়ে পড়ছিল, অন্যদিকে ফ্লাইট অ্যাটেন্ডেন্টরা ব্রডোকাস্টের মাধ্যমে ফ্লাইটে ডাক্তারের খোঁজ করছিল। সবমিলিয়ে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।"
"আমি ভেবেছিলাম বিমানটি বিস্ফোরিত হচ্ছে। আমি ভেবেছিলাম এভাবেই হয়তো মারা যাব," যোগ করেন তিনি।
এয়ারলাইন রেটিং-এর এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ জফ্রি টমাস ঘটনাটিকে 'খুবই উদ্ভট' হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি সিএনএনকে বলেন, "টেকনিক্যালি, বিমানের এই দরজা খোলা সম্ভব নয়।"
টমাস আরো বলেন, একটি এ৩২১ এয়ারবাসের অবতরণ গতি প্রায় ১৫০ নট, অর্থাৎ ঘণ্টায় ১৭২ মাইল।
তিনি বলেন, "দরজাটি যে এত গতির বাতাসের চাপ অতিক্রম করে খুলেছে, তা টেকনিক্যালি অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। কিন্তু কোনো না কোনোভাবে ঘটনাটি ঘটেছে।"
দক্ষিণ কোরিয়ার ভূমি, অবকাঠামো ও পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিমানের রক্ষণাবেক্ষণে কোনো অস্বাভাবিকতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য একটি বিমান নিরাপত্তা সুপারভাইজারকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।