রাশিয়ার সেনাবাহিনীর কাছে ভারী অস্ত্র সমর্পণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ওয়াগনার
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার (২৭ জুন) জানিয়েছে, মার্সেনারি বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ এর ভারী অস্ত্রসমূহ রাশিয়ান সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে, হয়তো সামনে স্বায়ত্ত্বশাসিত বাহিনী হিসেবে ওয়াগনার গ্রুপকে ভেঙে ফেলা হতে পারে।
ওয়াগনারকে রাশিয়ার নিয়মিত বাহিনীর অংশ করলে তার ফলে 'এটির সেনাদের যুদ্ধক্ষমতা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে' বলে মন্তব্য করেছেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন।
তা সত্ত্বেও, প্রিগোজিন বলেছেন, ওয়াগনার বাহিনী আগামী ৩০ জুন রস্তভের সাউদার্ন মিলিটারি ডিসট্রিক্ট সদরদপ্তরে নিজেদের ভারী অস্ত্রগুলো জমা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
তবে এখন পর্যন্ত ওয়াগনারের অস্ত্র হাতছাড়া করার প্রস্তুতির কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। এ বাহিনীর অস্ত্রাগারে ভারী অস্ত্রের তালিকায় আছে ট্যাংক, বিমান, হাউটজার, মাল্টিপল-লঞ্চ রকেট সিস্টেম, ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যাটারি।
এর আগে সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, মস্কোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশ নেওয়া ওয়াগনার সেনারা রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কিংবা অন্য নিরাপত্তা এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি করে যোগদান করতে পারবেন।
পুতিনের একাধিক প্রস্তাবে আরও বলা হয়, বাকি সেনারা চাইলে রাশিয়ায় তাদের পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারবেন। অথবা কেউ যদি রাশিয়ায় ফিরতে না চান, তাহলে প্রতিবেশী মিত্র দেশ বেলারুশেও চলে যেতে পারবেন।
এর আগে শনিবার (২৪ জুন) বিদ্রোহের উদ্দেশ্যে মস্কো অভিমুখে যাত্রা শুরু করেছিল ওয়াগনার সেনাবহর। তাদের থামাতে এক পর্যায়ে হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণ করে রাশিয়ান সেনাবাহিনী।
পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন মস্কোযাত্রা বন্ধ করে বাহিনীকে ঘাঁটিতে ফিরিয়ে নিতে রাজি হন।
মঙ্গলবার সকালে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিস জানিয়েছে, এটি ওয়াগনার বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে করা ফৌজদারি মামলাগুলো বন্ধ করেছে।
এছাড়া মঙ্গলবার রাশিয়ার রস্তভ থেকে ওয়াগনারের একটি বিমান বেলারুশের একটি বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলে জানা গেছে। তবে ওই বিমানে প্রিগোজিন ছিলেন কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
রাশিয়ার বিভিন্ন বাহিনীর মধ্যে কেবল ওয়াগনারই গত গ্রীষ্মের পর থেকে যুদ্ধে ইউক্রেনের দিকে অগ্রসর হতে পেরেছে। কয়েক মাস তুমুল লড়াইয়ের পর এটি বাখমুত শহর দখলে নেয়। ওই লড়াইয়ে কয়েক হাজার যোদ্ধা মারা গিয়েছিলেন।