চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে ইতিহাস গড়ল ভারত
ভারতের মহাকাশ সংস্থা জানিয়েছে, তাদের স্পেসক্রাফট চাঁদের বুকে সফলভাবে অবতরণ করেছে। দিন তিনেক আগে একই ধরনের মিশনে বিধ্বস্ত হয়েছিল রাশিয়ার ল্যান্ডার। ভারতের এ মিশনকে চাঁদে অনুসন্ধান ও মহাকাশ শক্তি হিসেবে দেশটির অবস্থানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল।
বুধবার (২৩ আগস্ট) চন্দ্রযান-৩ মিশনের স্পেসক্রাফটির চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ ভারতীয়রা টেলিভিশনে সরাসরি দেখেছেন।
দ্য ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো) জানিয়েছে, চন্দ্রযান-৩ স্পেসক্রাফট চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করেছে। চাঁদে মহাকাশযান নামানোর দ্বিতীয় চেষ্টা ছিল এটি ভারতের।
ভারত সরকার বর্তমানে বেসরকারি পর্যায়ে মহাকাশযান উৎক্ষেপণ এবং এ সংশ্লিষ্ট স্যাটেলাইট নির্ভর ব্যবসা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে।
এর আগে ২০১৯ সালে ইসরো'র চন্দ্রযান-২ মিশনে একটি অরবিটার সফলভাবে কক্ষপথে পাঠানো গেলেও এটির ল্যান্ডার চাঁদে নামার সময় বিধ্বস্ত হয়েছিল।
বুধবার অবতরণের আগে ইসরো জানিয়েছিল, সংস্থাটি অবতরণের স্বয়ংক্রিয় সিকোয়েন্স চালু করার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত।
আগামী দুই সপ্তাহ চন্দ্রযান-৩ কার্যকর থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ সময়ে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে এটি। চন্দ্রপৃষ্ঠের খনিজ উপাদানে বর্ণালী বিশ্লেষণ পরিচালনা করা হবে এ মিশনে।
নির্ধারিত অবতরণের আগে ভারতজুড়ে প্রতিটি মুহূর্ত কেটেছে উত্তেজনায়। দেশটির সংবাদপত্রগুলো প্রথম পৃষ্ঠায় ব্যানার শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করেছিল। আর টেলিভিশন চ্যানেলগুলো অবতরণের কাউন্টডাউন দেখা গিয়েছিল।
ভারতের বিভিন্ন উপাসনালয়ে মানুষ চন্দ্রযান-৩-এর সফল অবতরণের জন্য প্রার্থনা করতে বসেছিলেন। দেশটির শিশুরা প্রার্থনার জন্য গঙ্গার তীরে উপস্থিত হয়। বিভিন্ন স্থানের অনেক মসজিদেও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থান করছেন। তিনি সেখান থেকে এ অবতরণ দেখেছেন।
চাঁদের দক্ষিণ মেরুর পৃষ্ঠতল অসমান ও বন্ধুর হওয়ায় এখানে মহাকাশযান নামানো বেশ কঠিন। আর প্রথমবারে মতো তা করে ইতিহাস গড়ল ভারত। ভবিষ্যতের মিশনের জন্য ওই এলাকার বরফ থেকে জ্বালানি, অক্সিজেন ও পানি তৈরি করা সম্ভব বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।