বানর ঠেকাও! জি২০ সম্মেলন চলাকালীন শহরে বানরের উপদ্রব চায় না দিল্লি!
আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে জি২০ জোটের শীর্ষ সম্মেলন। এর সার্বিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আয়োজক দেশটি শহরে বানরের উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ভিন্নধর্মী নানা উদ্যোগ।
এক্ষেত্রে রাজধানী জুড়ে রাগান্বিত মুখভঙ্গির এশিয়াটিক বানর (ল্যাঙ্গুর) এর কাটআউট স্থাপন করা হয়েছে। মূলত শহরজুড়ে থাকা ছোট রেসাস ম্যাকাক জাতের বানরগুলোর যাতে সম্মেলন চলাকালীন কোনরকম উপদ্রব করতে না পারে, সেজন্যই এই উদ্যোগ।
আকারে ল্যাঙ্গুর বানর রেসাস ম্যাকাক জাতের বানরের তুলনায় বড় এবং বেশি আক্রমণাত্মক। তাই রেসাস বানরগুলো ল্যাঙ্গুরকে ভয় পায়। আর এই দুর্বলতাটিকেই বহু আগে থেকেই নানাভাবে কাজে লাগানো হয়। যেমন, ২০১০ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কমনওয়েলথ গেইমসেও ল্যাঙ্গুর জাতের বানর অনুষ্ঠানস্থলের আশেপাশে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ।
জি২০ সম্মেলন উপলক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন থেকে শুরু করে বিশ্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ নেতারা ভারত সফর করবেন। তাই প্রস্তুতিতে বিন্দুমাত্র ঘাটতি রাখতে চাইছে না দেশটি।
দিল্লির আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে আকারে ছোট রেসাস ম্যাকাক জাতের বানর। এগুলোকে প্রায়শই রাস্তায় দৌড়াতে কিংবা বাড়ির ছাদের ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। অনেকেই এদের উপদ্রবে অতিষ্ঠ। এমনকি বানরগুলো মাঝে মাঝে অপ্রত্যাশিতভাবে পথচারীদের আক্রমণও করে বসে।
জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষে শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় সৌন্দর্যবর্ধন, দেয়ালে রঙ করা, নানা রঙের বাহারি ফুলের গাছ লাগানোসহ নেওয়া হয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। এক্ষেত্রে এতসব আয়োজন বানরের কোনো আচরণে যাতে ম্লান হয়ে না যায়, সেজন্য নেওয়া হয়েছে এই কাটআউট বসানোর উদ্যোগ।
এ সম্পর্কে দিল্লি মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের ভাইস-চেয়ারপার্সন সতীশ উপাধ্যায় বলেন, "বানরগুলোকে তো আর স্থানান্তর, ক্ষতিগ্রস্ত কিংবা আঘাত করা যাবে না। তবে এরা ল্যাঙ্গুরদের দেখে ভয় পায়। তাই স্থাপন করা কাটআউট দেখে বানরগুলোর আর ঐ এলাকায় আসতে চাইবে না।"
সতীশ উপাধ্যায় জানান, শুধু কাটআউট নয়, ল্যাঙ্গুরের মতো ডাকতে পারে এমন বেশ কয়েকজন কর্মীও সম্মেলনের দিনগুলিতে নিয়োগ করা হবে। মূলত 'মাঙ্কিওয়ালা' বা 'বানরওয়ালা' নামের এই পদে ৩০ থেকে ৪০ জনকে নিয়োগ করা হবে।
এতে করে আওয়াজ শুনে রেসাস বানরগুলো মনে করবে যে, আশেপাশেই হয়তো ল্যাঙ্গুর রয়েছে। তাই ঐ স্থানগুলো তারা এড়িয়ে চলবে। এছাড়াও ঐ সময়ে বানরগুলো খাবারের সন্ধানে যাতে শহরে না আসে তাই বন এলাকায় প্রাণীগুলোর জন্য খাবার রাখা হবে।
এদিকে জি২০ সম্মেলন চলাকালীন সেন্ট্রাল দিল্লির গুরুত্বপূর্ণ সব পয়েন্টে জনসাধারণের যান চলাচল অনেকাংশেই বন্ধ করে দেওয়া হবে। মূলত মিটিংয়ের জায়গা ও হোটেলের বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের দ্রুত ও নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি কর্তৃপক্ষ।