এখনো সংকেতের অপেক্ষায় ভারত, ক্ষীণ হয়ে আসছে ল্যান্ডারের জেগে ওঠার আশা
চাঁদে বরফশীতল রাত পার করার পর ভারতের মুন ল্যান্ডারের জেগে ওঠার সম্ভাবনা 'প্রতি ঘণ্টায় ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে' বলে বিবিসিকে জানিয়েছেন দেশটির মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
তবে তারা ল্যান্ডারটিকে পুনরায় চালু করতে চান্দ্রদিন শেষ হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে যাবেন।
পৃথিবীর ১৪ দিনেরও বেশি সময় মিলে হয় চাঁদের একটি দিন বা রাত।
শুক্রবার ভারতীয় মহাকাশসংস্থা ইসরো জানায়, নতুন চান্দ্রদিন শুরু হওয়ার পর থেকে এটি ল্যান্ডার ও রোভারের সঙ্গে পুনরায় যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা করছে। কিন্তু চাঁদ থেকে এখনো কোনো সিগন্যাল পাওয়া যায়নি।
আগস্ট মাসে বিক্রম নামক ল্যান্ডারটি প্রজ্ঞান নামক রোভারটিকে নিয়ে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করে। এরপর দুই সপ্তাহ ধরে এ দুই যন্ত্র তথ্য-উপাত্ত ও ছবি সংগ্রহ করে। তারপর চাঁদে রাত শুরু হলে এগুলোকে 'স্লিপ মোডে' রাখা হয়।
ইসরো আশা করেছিল, ২২ সেপ্টেম্বর চাঁদে সূর্যের আলোর দেখা মিললে যন্ত্রদুইটির ব্যাটারি পুনরায় চার্জ হবে এবং মডিউলগুলো জেগে উঠবে।
গত শুক্রবারের পর থেকে ইসরো'র পক্ষ থেকে ল্যান্ডার আর রোভারের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে ইসরোর সাবেক প্রধান এএস কিরণ কুমার বিবিসি বলেন, 'প্রতিটি ঘণ্টা পার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ল্যান্ডারটির জেগে ওঠার সম্ভাবনা ক্রমশ ক্ষীণ হয়ে আসছে'।
'ল্যান্ডার আর রোভারের অনেকগুলো যন্ত্রাংশ রয়েছে। এগুলো হয়তো চাঁদের হিমশীতল তাপমাত্রায় টিকে থাকতে পারেনি,' বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, চাঁদের দক্ষিণ মেরুর আশপাশের তাপমাত্রা মাইনাস ২০০ থেকে মাইনাস ২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামার কথা জানা গেছে।
'ল্যান্ডারের ট্রান্সমিটার চালু না হলে পৃথিবীর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ স্থাপিত হবে না। এটাকে জানাতে হবে যে এটি টিকে আছে। এমনকি অন্য সব ব্যবস্থা অক্ষত থাকলেও, আমাদের সেটা জানার কোনো উপায় নেই,' বলেন তিনি।
ইসরোর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ল্যান্ডার-রোভারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
চন্দ্রযান-৩ মিশনের মাধ্যমে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে ভারত। প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সফলভাবে নভোযান নামাতে পেরেছে দেশটি।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের পর চন্দ্রপৃষ্ঠে সফট ল্যান্ডকারী দেশের তালিকায় নাম তুলেছে ভারত।
স্লিপ মোডে যাওয়ার আগে নিজেদের মিশন সম্পূর্ণ করেছে ল্যান্ডার ও রোভারটি। ইসরো জানিয়েছে, 'যদি বিক্রম ও প্রজ্ঞান জেগে না ওঠে, তাহলে তারা চাঁদের বুকে ভারতের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে থেকে যাবে।'