ইরানের কাসেম সোলাইমানির কবরের কাছে জোড়া বিস্ফোরণে নিহত শতাধিক
ইরানের প্রয়াত শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির স্মরণে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে 'সন্ত্রাসীদের হামলায়' জোড়া বিস্ফোরণে ১০০ জনের বেশি নিহত এবং অনেকে আহত হয়েছেন।
বুধবার (৩ জানুয়ারি) এ হামলা ও প্রাণহানির কথা জানিয়েছে ইরানি কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন আক্রমণে নিহত হন কাসেম সোলাইমানি।
ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনের খবরে বলা হয়েছে, কারমান শহরে সোলাইমানিকে কবর দেওয়া গোরস্তানে তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পরপর দুটি বিস্ফোরণ ঘটে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তাসংস্থা ইরনাকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সরকারি কর্মকর্তা বলেন, 'কারমানের শহীদ গোরস্তানে যাওয়ার সড়কে দুটো বিস্ফোরক ডিভাইস পুঁতে রাখা হয়েছিল। সন্ত্রাসীরা দূর থেকে সেগুলোর বিস্ফোরণ ঘটায়।'
প্রাথমিকভাবে ইরানের জরুরি সেবার একজন মুখপাত্র বাবাক ইয়েকতাপারাস্তের বরাতে জানানো হয়, বিস্ফোরণে ৭৩ জন নিহত ও ১৭০ জন আহত হয়েছেন। পরে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন জানায়, বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১০০ জন নিহত হয়েছেন।
কোনো গোষ্ঠী এখনো এ হামলার দায় স্বীকার করেনি।
ইরানি গণমাধ্যমের প্রচারিত বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, বিস্ফোরণস্থলে কয়েক ডজন দেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। কেউ কেউ আহতদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন, আবার অনেকে দ্রুত বিস্ফোরণস্থল থেকে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
কারমান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি'র প্রধান রেজা ফালাহ রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশনকে বলেন, 'এতসব নিরাপত্তা ব্যবস্থা সত্ত্বেও ভয়ংকর এক শব্দ শোনা যায়।'
ওই অনুষ্ঠানে কয়েকশ ইরানি সোলাইমানির মৃত্যুবার্ষিকীকে স্মরণ করতে জড়ো হয়েছিলেন। স্থানীয় কিছু গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, আহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।
ফালাহ বলেন, 'আমরা এখন আহতদের ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিচ্ছি। প্রচুর ভিড়, ওখানকার সব রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে; তাই সরানোর কাজটা বেশ কঠিন।'
ইরানের রেভল্যুশন গার্ড কোর-এর কুডস ফোর্সের প্রধান কমান্ডার ছিলেন কাসেম সোলাইমানি। বিদেশের মাটিতে ইরানের হয়ে বিভিন্ন গুপ্ত মিশন পরিচালনা করতেন তিনি। মধ্যপ্রাচ্য থেকে মার্কিন বাহিনী সরানোর ইরানের দীর্ঘ ক্যাম্পেইনের অন্যতম মুখ ছিলেন এই জেনারেল।
২০২০ সালে বাগদাদ বিমানবন্দরে ড্রোন হামলা চালিয়ে সোলাইমানিকে হত্যা করে ওয়াশিংটন। এর প্রতিশোধ হিসেবে তেহরান মার্কিন সৈন্য থাকা দুটি ইরাকি সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায়। ওই সময় ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রায় যুদ্ধ শুরুর আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল।