১৭ বছরের মধ্যে প্রথমবার সুদহার বাড়াল জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক
নীতি সুদহার মাইনাস শূন্য দশমিক ১ শতাংশ থেকে কিছুটা বাড়িয়ে নির্ধারণ করেছে জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আজ মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) ব্যাংক অব জাপান (বিওজে) নীতি সুদহার শূন্য থেকে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ১ শতাংশ করার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এতে ২০০৭ সালের পর প্রথমবারের মতো দেশটি সুদহার বাড়াল। এর আগে প্রবৃদ্ধি অর্জনে হিমশিম খাওয়া অর্থনীতিকে প্রণোদনা দিতে এমন সুদহার কার্যকর ছিল দেশটিতে।
তবে সম্প্রতি দেশটিতে ভোক্তামূল্য সূচক ও মজুরি বৃদ্ধির পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
২০১৬ সালে প্রথম কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ ধার করার খরচ শূন্যেরও নিচে নামানোর মতো অপ্রচলিত পদক্ষেপটি নেয় বিওজে। উদ্দেশ্য ছিল, ঋণ নেওয়াকে উৎসাহিত করে- স্থবির হয়ে পড়া অর্থনীতিতে বিনিয়োগ উৎসাহিত করা। সুদহার শূন্যের নিচে বা নেতিবাচক থাকলে ব্যাংকে অর্থ রাখার জন্য উল্টো আমানতকারীকেই সুদ দিতে হয়। অন্যদিকে, খুবই কম সুদে ঋণ দেওয়া যায়। উভয়ই ব্যয়কে উৎসাহিত করে অর্থনীতিকে প্রণোদনা দেয়।
ইউরোপের কিছু দেশও এর আগে নেতিবাচক সুদহার ছিল। তবে তারা সেখান থেকে সরেও আসে। সবশেষ জাপানেই এটি কার্যকর ছিল। এখন বিওজের সিদ্ধান্তের ফলে, পৃথিবীর আর কোনো দেশেই নেতিবাচক সুদহার রইলো না।
এছাড়া ইল্ড কার্ভ কন্ট্রোল (ওয়াইসিসি) নামের একটি নীতি থেকেও সরে এসেছে ব্যাংক অব জাপান। এই নীতির অধীনে সুদহার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক জাপানের সরকারি বন্ড কিনত।
ওয়াইসিসি ২০১৬ সাল থেকে কার্যকর ছিল, তবে এর মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি সুদহারকে বাড়তে না দিয়ে আর্থিক বাজারে বিচ্যুতি ঘটানো হচ্ছে এমন সমালোচনাও ছিল।
মঙ্গলবার বিওজে এক বিবৃতিতে ঘোষণা দিয়েছে, তারা আগের মতো প্রায় একই পরিমাণ সরকারি বন্ড কেনা অব্যাহত রাখবে, আর দীর্ঘমেয়াদি সুদহার বাড়ার সম্ভাবনা দেখলে এই ক্রয় আরো বাড়াবে।
অবশ্য নীতি সুদহারকে নেতিবাচক ধারা থেকে বের করে আনার সিদ্ধান্তকেই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে দেখছেন আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা। গত বছরের এপ্রিলে কাজুও উয়েদা বিওজির গভর্নর হওয়ার পর থেকেই তিনি সুদহার বাড়াবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছিল।