গণমাধ্যম বলছে: নর্ড স্ট্রিম তদন্তে ইউক্রেনীয় ডুবুরি প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তারে পোল্যান্ডকে অনুরোধ জার্মানির
জার্মানি পোল্যান্ডকে এক ইউক্রেনীয় ডুবুরি প্রশিক্ষককে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানিয়েছে। জার্মানি দাবি করছে, দু'বছর আগে নর্ড স্ট্রিম গ্যাস পাইপলাইন বিস্ফোরণের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। আজ বুধবার জার্মান গণমাধ্যমগুলোতে এ তথ্য উঠে এসেছে।
তবে, ওই ব্যক্তি এখন আর পোল্যান্ডে নেই বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম।
বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে বাল্টিক সাগরের নীচে গ্যাস পরিবহনকারী নর্ড স্ট্রিমের ১ ও ২ পাইপলাইনগুলো বসানো হয়। ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার পূর্ণ আগ্রাসণ শুরু হওয়ার সাত মাস পর ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে পাইপলাইনগুলোতে একাধিক বিস্ফোরণে ফাটল ধরে যায়।
জার্মান সংবাদপত্র এসজেড ও ডাই জাইট এবং এআরডি'র সম্প্রচার সূত্রে জানা গেছে, জার্মান তদন্তকারীরা মনে করছেন ওই প্রশিক্ষকসহ একটি ডুবুরি দল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
তবে জার্মান প্রসিকিউটর জেনারেলের কার্যালয় এসব প্রতিবেদনের ওপর মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়। তারা জানিয়েছে, জুন মাসে জার্মান সরকার পোল্যান্ডকে একটি ইউরোপীয় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা হস্তান্তর করেছে। তবে এ বিষয়ে পোল্যান্ডের জাতীয় পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় থেকে এখনো কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। অপরদিকে আইন মন্ত্রণালয়কে ইমেইলে মন্তব্যের জন্য অনুরোধ করা হলেও, তারা কোনো উত্তর দেয়নি।
সন্দেহভাজন সহযোগী
জার্মান তদন্তে আরও এক পুরুষ ও এক নারীকে শনাক্ত করেছে। তারাও ইউক্রেনীয় ডুবুরি প্রশিক্ষক। তবে সংবাদপত্র এসজেড ও ডাই জাইট এবং এআরডি জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এখনও কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়নি।
বিস্ফোরণের ফলে নর্ড স্ট্রিম পাইপলাইনের চারটির মধ্যে তিনটি ধ্বংস হয়ে গেছে। আর ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের দরুণ জার্মানির এ নির্ভরশীলতা এখন একটি বিতর্কের প্রতীক হয়ে আছে।
রাশিয়া বিস্ফোরণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ইউক্রেনকে দায়ী করেছে। যার কারণে রাশিয়ার গ্যাসকে ইউরোপীয় বাজার থেকে মূলত বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। এই দেশগুলো সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
জার্মানি, ডেনমার্ক এবং সুইডেন এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। সুইডেন ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা কিছু বস্তুতে বিস্ফোরক পদার্থের চিহ্ন পেয়েছে। এতে তারা নিশ্চিত যে বিস্ফোরণগুলি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল।
তবে সুইডেন ও ডেনমার্কের তদন্ত ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হয়ে গেছে এবং কোনো সন্দেহভাজন শনাক্ত করা যায়নি।
২০২৩ সালের জানুয়ারিতে জার্মানি একটি জাহাজে বিস্ফোরক বহনকারী সন্দেহে একটি জাহাজে তল্লাশী চালায়। এ বিষয়ে তারা জাতিসংঘকে জানায়, তারা মনে করছেন যে প্রশিক্ষিত ডুবুরীরা সম্ভবত ৭০ থেকে ৮০ মিটার (২৩০-২৬২ ফিট) গভীরতায় ওই পাইপলাইনগুলোতে বিস্ফোরক ডিভাইস যুক্ত করেছে।