হিজবুল্লাহর সম্ভাব্য প্রধান হিসেবে আলোচিত কে এই হাশেম সাফিউদ্দিন?
ইসরায়েলি হামলায় সম্প্রতি নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহ প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর। এক্ষেত্রে সশস্ত্র সংগঠনটির পরবর্তী নেতা হিসেবে তারই সহচর হাশেম সাফিউদ্দিনের নাম শোনা যাচ্ছে।
তবে এমন পরিস্থিতিতেও হিজবুল্লাহর জন্য তৈরি হয়েছে নতুন শঙ্কা। গত শুক্রবার বৈরুতের দাহিয়েহ এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলার পর থেকে সাফিউদ্দিনের সঙ্গে সংগঠনটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কার্যনির্বাহী পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে সাফিউদ্দিন সংগঠনের একজন অত্যন্ত উচ্চপদস্থ সদস্য। তিনি সম্পর্কে নাসরাল্লাহর চাচাত ভাই।
১৯৮০-এর দশকের শুরুতে সাফিউদ্দীন ইরানে পড়াশোনা করেছেন। নাসরাল্লাহর মতোই তিনি ইসরায়েল ও পশ্চিমাদের কট্টর সমালোচক। একইসাথে স্বাভাবিকভাবে ইরানের সাথে তার গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
সাফিউদ্দীন এর আগে হিজবুল্লাহ ও ইরানের বিপ্লবী গার্ড কর্পসের মধ্যে গভীর সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছিলেন। এমনকি তার ছেলে ২০২০ সালে নিহত ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেইমানির মেয়েকে বিয়ে করেছেন।
সাফিউদ্দীনের জন্ম ১৯৬৪ সালে দক্ষিণ লেবাননে। গাজা যুদ্ধের পুরো সময়কালে তিনি ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করেছেন।
কিছুদিন আগে লেবাননে পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ঘটনায় সাফিউদ্দীন বলেছিলেন, "এর শেষ না দেখা পর্যন্ত হিজবুল্লাহ ক্ষান্ত হবে না।"
সাফিউদ্দীন দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন নীতির একজন কঠোর সমালোচক। তিনি গাজা ও দক্ষিণ লেবাননে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডে ওয়াশিংটনকে সহায়তাকারী ও মদতদাতা হিসেবে দেখেন।
এদিকে ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস বলছে, গত বৃহস্পতিবার শেষ রাতে বৈরুতের দক্ষিণের শহরতলিতে ভূগর্ভস্থ একটি বাংকারে ছিলেন সাফিউদ্দিন। সেদিন তার অবস্থান লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছিল ইসরায়েল।
হামলার পর থেকে সাফিউদ্দিনের অবস্থা নিয়ে হিজবুল্লাহ প্রাথমিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশ করে দেয় হিজবুল্লাহ।
বিবৃতিতে সংগঠনটির মিডিয়া অফিস জানায়, সাফিউদ্দিনের নিহত হওয়া নিয়ে বিভিন্ন গ্রুপের সূত্রের বরাত দিয়ে যে প্রতিবেদনগুলো সংবাদমধ্যমে এসেছে তা অর্থহীন ও গুজব।
এদিকে আল জাজিরার রাজনৈতিক বিশ্লেষক মারওয়ান বিশারা মনে করেন, হিজবুল্লাহর সাথে যোগাযোগ বিছিন্ন হওয়াই প্রমাণ করে তাদের গোয়েন্দা তথ্য অন্য পক্ষের কাছে চলে যাচ্ছে। এর ফলেই ইসরায়েল নেতাদের একের পর এক স্থানের তথ্য পেয়ে হামলা করতে পারছে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেব মতে, দেশটিতে ইসরায়েলের চলমান ক্রমাগত বোমাবর্ষণে ২ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। একইসাথে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।