কানাডায় অপরাধে সমর্থন দিচ্ছে ভারত, অভিযোগ ট্রুডোর
ভারত সরকার কানাডার মাটিতে কানাডিয়ানদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালিয়ে একটি 'মৌলিক ভুল' বলে করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রুডো বলেন, "আমার মনে হয় এটা স্পষ্ট যে, ভারতের সরকার একটি মৌলিক ভুল করেছে। তারা মনে করেছে, কানাডার মাটিতে কানাডিয়ানদের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, যেমন হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি বা অন্যান্য সহিংসতায় সহায়তা করতে পারবে। এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।"
তিনি আরও বলেন, "কোনও দেশই, বিশেষ করে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, যা আইনের শাসনকে সমর্থন করে, তার সার্বভৌমত্বের এমন মৌলিক লঙ্ঘন মেনে নিতে পারে না।"
শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীর হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারত ও কানাডার মধ্যে সম্পর্ক এখন তলানিতে। দুই দেশই নিজেদের দেশ থেকে অন্য দেশের ছয়জন করে কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কানাডা থেকে তাদের শীর্ষ কূটনীতিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ইস্যুতে বলে, "বর্তমান কানাডার সরকার তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে, সেটা আমরা বিশ্বাস করি না। তাই ভারত সরকার হাই কমিশনারসহ অন্যান্য কূটনীতিক ও কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।"
কানাডিয়ান পুলিশের অভিযোগ, ভারতীয় এজেন্টরা হত্যাকাণ্ড, চাঁদাবাজি এবং সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত এবং প্রো-খালিস্তান আন্দোলনের সমর্থকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। যদিও দিল্লী এই অভিযোগকে 'অবাস্তব' বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ট্রুডো বলেন, "রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) পাওয়া প্রমাণ উপেক্ষা করা সম্ভব নয়। এই প্রমাণ থেকে বোঝা যায়, কানাডায় জননিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা জরুরি। এ কারণেই কানাডা ব্যবস্থা নিয়েছে।"
ভারত এই অভিযোগগুলো দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে এবং বলেছে, কানাডা তার দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি।
গত বছরের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভ্যাঙ্কুভার থেকে ৩০ কিলোমিটার পূর্বে সারের গুরু নানক শিখ গুরুদ্বারে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। তার ঘনিষ্ঠজনরা বলছেন, মৃত্যুর আগে কানাডার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাকে সতর্ক করেছিল যে তার প্রাণনাশের হুমকি রয়েছে।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ভারত সরকার এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলে অভিযোগ করার পরে উভয় দেশের মধ্যে কূটনৈতিক বিরোধ আরও বেড়ে যায়।