জাপানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে প্রধানমন্ত্রী ইশিবার জোট সরকার
জাপানে আজ নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ভোটগ্রহণ হয়েছে। রবিবার (২৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন জাপানের ভোটাররা।
এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সরকারের ভাগ্য নির্ধারণ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এবারের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন জোট লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হতে পারে। বিভিন্ন জরিপ থেকে এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে এলডিপির এক দশকের আধিপত্যের অবসান ঘটতে পারে।
মূলত জাপানে আর্থিক কেলেঙ্কারি ও মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে ইশিবার জোট সরকার। জাপানে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে চলছে। অন্যদিকে প্রতিবেশী চীনের সাথে সম্পর্কের উত্তেজনাও বাড়ছে। তাই এবার ভোটের মধ্যদিয়ে তার জোট সরকারকে শায়েস্তা করতে পারে ভোটাররা।
জনমত জরিপ বলছে, এলডিপি এবং তার দীর্ঘদিনের অংশীদার কোমেইতো এবার বেশি ভোট না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তেমনটা হলে জোটটি এবার তার সংসদীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাবে।
মাত্র এক মাস আগে ক্ষমতায় আসা ইশিবা পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হলে, ছোট দলগুলোর সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করতে বাধ্য হবেন। এর ফলে জোট সরকারের কিছু নীতিগত ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।
তবে কোনো জরিপেই এলডিপি ক্ষমতা হারানোর পূর্বাভাস পাওয়া যায়নি। বলা হচ্ছে তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধীরে ধীরে সুদহার বাড়াতে চায়। এই প্রেক্ষাপটে ইশিবা যদি এমন কোনো অংশীদার বেছে নেন, যারা শূন্যের কাছাকাছি সুদহার বজায় রাখার পক্ষপাতী, তাহলে রাজনৈতিক মতবিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। এই বিরোধের প্রভাব বাজারে পড়তে পারে এবং শেষ পর্যন্ত তা ব্যাংকটির জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
কান্দা ইউনিভার্সিটি অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জাপানি রাজনীতি বিশেষজ্ঞ জেফ্রি হল বলেন, 'এমনটা ঘটলে তিনি একজন নেতা হিসেবে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়বেন, তার দল যেসব নীতিতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিতে চায়, সেগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দুর্বল হয়ে পড়বে। কারণ জোটে অংশীদার আনলে, তাদের সঙ্গে কিছু আপস করতে ইশিবা বাধ্য হবে, তা যে দলেরই হোক।'
গত সপ্তাহে আসাহি সংবাদপত্রের এক জরিপে দেখা গেছে, নিম্নকক্ষে ২৪৭টি আসনের মধ্যে এলডিপি ৫০টি আসন হারাতে পারে এবং কোমেইতো ৩০টির নিচে নেমে যেতে পারে। এমন হলে জোটটির কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৩৩ আসনের চেয়ে কম আসন থাকবে।
জরিপ অনুসারে, এলডিপি স্বাভাবিকভাবেই সংসদে সবচেয়ে বড় শক্তি হিসেবে থাকবে, তবে এটি বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অব জাপানের (সিডিপিজে) কাছে অনেক ভোট হারাতে পারে। ২০০৯ সালে এই দলটি এলডিপিকে পরাজিত করেছিল।
আসাহি পূর্বাভাস দিয়েছে, সিডিপিজে এবার ১৪০ টি আসন জিততে পারে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি