পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা, দুর্দশায় লাখ লাখ মানুষ
পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যায় কয়েক লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, নিহত হয়েছে কয়েকশো মানুষ। পরিস্থিতি সামলে নিতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে দেশটির সরকার।
শুক্রবার (২৬ আগস্ট) পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিগত ২৪ ঘণ্টায় ৩৪ জনসহ জুন থেকে এ পর্যন্ত বন্যায় ৯০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
দক্ষিণ সিন্ধু প্রদেশের সুক্কুরের পুরানো শহরের রাস্তার তাঁবুতে আশ্রয় খুঁজছে হাজার হাজার মানুষ। সহায়-সম্পদ সব হারিয়ে অনেককেই কেবল বিছানা পেতে বসে থাকতে দেখা গেছে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে।
বর্জ্য পয়ঃনিষ্কাশন পাইপের নোংরা পানিতে রাস্তাঘাট প্লাবিত হওয়ায় পানিবাহিত রোগের আশঙ্কায় আতঙ্কিত সময় পার করছেন আক্রান্ত এলাকার বাসিন্দারা।
বন্যায় শুধু সিন্ধু প্রদেশেই ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। সরু রাস্তার দুইধারে তাঁবু টাঙাতে শুকনো মাটি খুঁজছে লোকজন। কারণ সামনে বৃষ্টি আরও বাড়তে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেন, মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ বা ৩৩ মিলিয়ন মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দুর্যোগ মোকাবেলায় আরও আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে পাকিস্তান। এরজন্য ইসলামাবাদে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
তিনি জানান, চলতি মৌসুমে বন্যায় যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা ২০১০-১১ সালের বন্যার সঙ্গে তুলনীয়।
এর আগে, দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শেরি রেহমান বলেছিলেন, পাকিস্তান বর্তমানে অষ্টম মৌসুমী চক্রের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যদিও সাধারণত দেশটিতে তিন থেকে চার চক্র মৌসুমী বৃষ্টি হয়।
গ্রীষ্ম শুরু হওয়ার পর থেকে একাধিক বর্ষা চক্র আঘাত হেনেছে পাকিস্তানে। এতে দেশজুড়ে ৪ লাখেরও বেশি মানুষের ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে।
জাতিসংঘের দুর্যোগ ত্রাণ সংস্থা ওসিএইচএ (অফিস ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অফ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাফেয়ার্স) বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, অন্তত ১ লাখ ৮৪ হাজার মানুষ ত্রাণ শিবিরে বাস্তুচ্যুত অবস্থায় রয়েছেন।
পাকিস্তানের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষ করে সিন্ধু প্রদেশ এ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
- সূত্র: বিবিসি