সবাই যখন ঘরে, বাইরে তারা
নেত্রকোনা। নীরব-নিস্তব্ধ শহর। ওষুধ ও আর নিত্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বেরোচ্ছে না মানুষ। এরই মধ্যে শহরজুড়ে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সতর্কতামূলক বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যাচ্ছে কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এসব সংগঠনের কর্মীদের নানামুখি তৎপরতা সাধারণ মানুষের দৃষ্টি কেড়েছে।
শনিবার দুপুরে জেলা শহরের থানার মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, একটি নিত্যপণ্যের দোকানের সামনে তিন ফুট দূরে দূরে তিনটি বৃত্ত আঁকছেন ছাত্র ইউনিয়নের স্থানীয় কয়েক কর্মী- যেন ক্রেতারা নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয় সওদাপাতি কিনতে পারেন।
সংগঠনটির জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পার্থ প্রতিম সরকার জানান, সারা শহরের সব নিত্যপণ্য, ওষুধ ও সবজির দোকানের সামনে এমন করে বৃত্ত এঁকে দেবেন তারা। এরই মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নের কর্মীরা সাধারণ মানুষের মাঝে তাদের নিজেদের তৈরি ১ হাজার ৪শ টি হ্যান্ড স্যানিটাইজারও বিতরণ করেছে।
সকালে শহরের তেরিবাজার মোড়ে গিয়ে দেখা গেছে, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটির কয়েক স্বেচ্ছাসেবী রাস্তায় দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সতর্কতামূলক লিফলেট বিতরণ করছেন। একই সঙ্গে প্রত্যককে মাস্ক ব্যবহার করতে উব্দুদ্ধ করছেন তারা। একজন মাস্ক বিক্রেতাকে পাশেই দাড়ঁ করিয়ে রেখেছেন এ কর্মীরা।
শহীদ মিনার মোড়ে গিয়ে দেখা গেল, রেডক্রিসেন্টের তিন তরুণী স্বেচ্ছাসেবী একটি অটোরিকশায় চড়ে সতর্কতামূলক মাইকিং করছেন। কথা প্রসঙ্গে জানান, সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা অবধি শহরের সব অলিগলি এমনকি গ্রামেও গিয়ে মাইকিং করছেন তারা। রেডক্রিসেন্টের জেলা শাখার সেক্রেটারি গাজী মোজাম্মেল হোসেন টুকু জানান, টানা এক সপ্তাহ ধরে চলছে তাদের প্রচারাভিযান।
একইভাবে জেলা সদরের পাড়া-মহল্লায় গিয়ে সতর্কতামূলক বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী এবং শিশুছায়া নামে দুটি সংগঠনের কর্মীরাও। উদীচীর জেলা শাখার সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান জানান, ইতোমধ্যে সংগঠনটির পক্ষ থেকে বেশকিছু বিলবোর্ড টানানো হয়েছে। পাশাপাশি কর্মীরা গ্রুপ করে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গিয়ে প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন।
স্থানীয় সুধীমহল মনে করেন, সমাজের বিত্তবানরা এসব কর্মকাণ্ডের পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে এলে স্বেচ্ছসেবীরা করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে আরও বেশি সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারবেন।