জঙ্গল সলিমপুর বস্তিতে সরকারের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে টাস্কফোর্স কমিটি গঠন
জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ অক্ষুণ্ণ রেখেই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের বস্তিতে পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নে একাধিক টাস্কফোর্স কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এছাড়াও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান বলেছেন, সীতাকুণ্ডের ছিন্নমূল বস্তির যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। আগামী একমাসের মধ্যে জঙ্গল সলিমপুর থেকে সকল বস্তিবাসীকে উচ্ছেদ করে সরকারের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা হবে।
সোমবার জঙ্গল সলিমপুরে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের এক সভা শেষে রাত সাড়ে সাতটার দিকে জেলা প্রশাসক মুঠোফোনে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসক মোমিনুর রহমান বলেন, 'যারা পাহাড় কেটে, বনের গাছ কেটে অবৈধ স্থাপনা তৈরী করে সরকারি খাস জমিতে আছে তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হবে। মামলার হাজার হাজার আসামি আছে, এদেরকে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হবে। এদেরকে গ্রেপ্তারের জন্য চিরুনি অভিযান চলবে। আর পর্যায়ক্রমে আগামী একমাসের মধ্যে এখান থেকে সবাইকে উচ্ছেদ করা হবে।'
আরও পড়ুন-চট্টগ্রামে বস্তিতে গুলি: প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে ঢাকা যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার ৬১
প্রকৃত ভূমিহীনদের পুনর্বাসন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, 'এখানে যারা প্রকৃত ভূমিহীন রয়েছে তাদের নিজ নিজ উপজেলায় পুনর্বাসন করা হবে। তাদের তালিকা আমাদের কাছে আছে।'
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে সভায় অংশ নেন চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী সহ জননিরাপত্তা বিভাগ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগের সিনিয়র সচিব সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রামরক্ষা বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা।
তবে বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জঙ্গল সলিমপুরের ছিন্নমূল বস্তি থেকে হাজার হাজার মানুষকে উচ্ছেদ ও গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা সম্পর্কে মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন বলেন, কোনো নাগরিককে তার বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পূর্বে পুনর্বাসনের বিষয় রয়েছে। এ বিষয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে।
বন্দর নগরীর অদূরে জঙ্গল সলিমপুর ও আলীনগরে ৮৫০ একর খাস জমিতে গড়ে ওঠা বস্তিতে বাস করছে প্রায় এক লাখের মতো গৃহহীন মানুষ। জলবায়ু সংকট সহ অন্যান্য দুর্যোগের কারণে এদের অধিকাংশই পৈতৃক ভিটা হারিয়েছে।
২০০৪ সালে তৎকালীন সরকার চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন বস্তি থেকে এসব মানুষকে উচ্ছেদ করে ওই এলাকায় আশ্রয় দেন।