এবার মায়ের জন্য স্বর্ণের মালা কিনতে পারবেন, খুশিতে আত্মহারা কৃষ্ণা
সামনেই দূর্গা পূজা। নিজের আয়ের অর্থ দিয়ে মায়ের জন্য কিনবেন স্বর্ণের মালা, পছন্দ করাও শেষ। কিন্তু এর মাঝে ঘটে যায় বিপত্তি। সাফ জিতে দেশে ফেরার পথে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরে কৃষ্ণা রানি সরকারের ব্যাগ থেকে চুরি হয় ৫০০ ডলার ও ৫০ হাজার টাকা। ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত মাটি হয়ে যায় তার।
যদিও মন খারাপ করে থাকতে হচ্ছে না কৃষ্ণাকে। দুদিন পরই বাফুফে সভাপতির কাজী সালাউদ্দিনের পক্ষ থেকে চুরি হওয়া টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তাকে। কষ্টার্জিত টাকা ফিরে পেয়ে খুশির সীমা নেই কৃষ্ণার। বাংলাদেশ নারী দলের ফরোয়ার্ডের আরও বড় আনন্দ, এবার মায়ের পছন্দ করা স্বর্ণের মালা কিনতে পারবেন বলে। কাজী সালাউদ্দিনের পক্ষে শনিবার বাফুফে ভবনে নগদ অর্থ ও ফোন বুঝিয়ে দেন উইমেন উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ।
কেবল কৃষ্ণারই নয়, বিমানবন্দরে শামসুন্নাহার সিনিয়রের ব্যাগ থেকেও টাকা চুরি যায়। কৃষ্ণার ব্যাগে ছিল ৯০০ ডলার ও ৫০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ৪০০ ডলার ছিল সানজিদা খাতুনের। শামসুন্নাহারের ব্যাগ থেকে চুরি হয় ৫০০ ডলার। তাদের হারানো অর্থের দ্বিগুণ বুঝিয়ে দিয়েছেন বাফুফে সভাপতি। কৃষ্ণাকে দেড় লাখ, শামসুন্নাহারকে ১ লাখ ও সানজিদা আইফোন কিনতে চেয়েছিলেন বলে তাকে ফোন কিনে দেওয়া হয়েছে।
হারানো অর্থ ফিরে পাওয়ায় কৃষ্ণার উচ্ছ্বাস সবচেয়ে বেশি। এই টাকা দিয়েই যে তিনি মায়ের জন্য স্বর্ণের মালা কিনবেন। বাফুফের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে কৃষ্ণা বলেন, 'প্রথমে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের ফেডারেশনের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন স্যারকে। ধন্যবাদ জানাতে চাই উইমেন উইংয়ের চেয়ারম্যান কিরণ আপাকে।'
'কারণ তাদের মাধ্যমেই আজ আমার টাকাটা পাওয়া। সালাউদ্দিন স্যার বলেছিলেন উনি টাকাটা দেবেন, উনি দিয়েছেন। তো আমরা সবাই অনেক খুশি। আমি আজকেই যাবো, আমার মায়ের জন্য যে মালাটা দেখেছি, সেটা নিয়ে আসবো।' যোগ করেন সাফ ফাইনালে বাংলাদেশের পক্ষে জোড়া গোল করা কৃষ্ণা।
আইফোন কেনার স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় উচ্ছ্বাসের শেষ নেই সানজিদারও, 'আমি অনেক অনেক খুশি, ভালো লাগছে আইফোন পেয়ে। আমার স্বপ্ন ছিল প্রাইজমানির টাকার সঙ্গে আরও কিছু টাকা যোগ করে একটা ফোন কিনবো। এখন সেটা পেয়ে গেছি। সালাউদ্দিন স্যারকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আমাদের আর কোনো কথা নেই। আমাদের যা গিয়েছিল, তারচেয়ে তিনগুণ বেশি পেয়েছি।'
বাফুফে সভাপতি কথা দেওয়ায় দ্রুত টাকা পাওয়ার ব্যাপারে বিশ্বাস ছিল শামসুন্নাহারের। তিনি বলেন, 'প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমাদের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন স্যারকে। কারণ আমরা যতটুকু হারিয়েছি, তার থেকে বেশি পেয়েছি। আমরা অনেক খুশি। স্যার মিটিংয়ে বলেছিলেন, "এই টাকাটা আমি দিয়ে দেব। তোমরা চিন্তা করো না।" তখনই ভেবেছি আমাদের তাড়াতাড়ি দিয়ে দেবে।'