তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরই গাইবান্ধায় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে: ইসি আলমগীর
অনিয়মের কারণে বন্ধ হওয়া গাইবান্ধায় পুনর্নির্বাচনের তারিখ তদন্ত কমিটির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ইলেকশন কমিশনার মো. আলমগীর।
মঙ্গলবার রাজধানীর নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই তথ্য দেন।
নির্বাচন বন্ধ করার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, "গাইবান্ধার নির্বাচনে দেখা যায়, শুরু থেকেই এজেন্টগণ গোপন কক্ষে ঢুকে ইভিএম বাটন চেপে দিচ্ছে। আমরা সেসময় প্রিজাইডিং অফিসারকে ফোন করি।"
প্রিজাইডিং অফিসার কমিশনের নির্দেশনা পালন না করে অসহযোগিতা করছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, "এটা আমাদের কাছে খুবই আশ্চর্যের লেগেছে। আমরা অনিয়মকারীকে আইনে সোপর্দ করতে বলি। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আইনে সোপর্দ করেনি। পরপর তিনটা কেন্দ্রে আমরা এই রকম অবস্থা দেখেছি। সেগুলোতে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হয়।"
"অন্যান্য কেন্দ্রেও একই অবস্থা দেখা যায়। পরে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে কমিশনের ফোনে কথা হয় কিন্তু অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি," যোগ করেন তিনি।
তাই কমিশন নির্বাচন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে আলমগীর বলেন, "আইন অনুযায়ী কমিশনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন চলাকালীন সময়ের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নির্বাচন হয়ে গেলে আর কিছু করার থাকে না।"
"এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে আমরা অনিয়ম দেখতে পেয়েছি। এরপরও নির্বাচন হলে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য হতো না। এজন্যই আমরা নির্বাচন বন্ধ করে দিয়েছি, আবার পুনঃনির্বাচন করব।"
নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে জানিয়ে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের পাঠানো চিঠির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "তারা কী লিখেছে আমরা জানি না। আমরা কোন রিপোর্ট পাইনি।"
আইনগতভাবে এই ধরনের চিঠি দেওয়ার কোন সুযোগ নাই বলেও উল্লেখ করেন কমিশনার আলমগীর। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তি দেওয়ার কতটুকু এখতিয়ার কমিশনের আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "যদি তদন্তে দোষী প্রমাণ হয় তাহলে শাস্তি দেওয়ার পুরো এখতিয়ার আছে আমাদের।"
দোষ প্রমাণিত হলে তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা থেকে শুরু করে যেকোনো ব্যবস্থা কমিশন নিতে পারবে বলে জানান তিনি।
"দুই মাস পর্যন্ত তাদেরকে সাসপেন্ড করে রাখার ক্ষমতা কমিশন রাখে। এছাড়া আইন অনুযায়ী আমরা যে শাস্তির কথা বলব তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাস্তবায়ন করে আমাদেরকে আবার জানাতে হবে। যে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন না, তাদের বিরুদ্ধেও কমিশন ব্যবস্থা নিতে পারবে।"
তদন্তের মাধ্যেমে অপরাধের মাত্রা বুঝে শাস্তি নির্ধারণ হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
আরপিও সংশোধনীর বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমরা সংশোধনী প্রস্তাব দিয়েছি। এখন এটা আইন মন্ত্রণালয়ের বিষয়। আমাদেরকে এখনো জানানো হয়নি।"
জাতীয় নির্বাচনে কী পরিমাণ সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "প্রায় ৪২ হাজার কেন্দ্র হবে, সেখানে প্রায় আড়াই লাখ বুথ হবে। ২.৫ লাখ ক্যামেরা ব্যবহার হতে পারে।"
মাঠ প্রশাসনের উপর বিশ্বাস নেই বলেই সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "না এমনটা নয়।" নির্বাচন আরও সুষ্ঠু ও সুন্দর করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারই এর উদ্দেশ্য বলে তিনি জানান।