প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রার্থিতায় লড়া প্রায় নিশ্চিত সুনাকের, ১০০’র বেশি ভোটে এগিয়ে আছেন এখনি
দলের পরবর্তী নেতা ও ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য ঋষি সুনাক খুব শীঘ্রই নিজের প্রার্থীপদ নিশ্চিত করবেন বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
মাত্র ৪৫ দিনের মধ্যে ডাউনিং স্ট্রিট থেকে স্বেচ্ছায় বিদায় নিলেন লিজ ট্রাস। তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে প্রথম রাউন্ডের ভোটে অংশ নিতে ঋষি ইতোমধ্যে ১০৪টি মনোনয়ন নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে বরিস জনসন পদত্যাগ করার পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার নির্বাচনে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন সুনাক।
এদিকে ছুটি বাদ দিয়ে যুক্তরাজ্যে ফিরেছেন বরিস জনসন। শোনা যাচ্ছে তিনিও নাকি আবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য লড়বেন।
এখন পর্যন্ত হাউজ অব দ্য কমন্স-এর নেতা পেনি মর্ডন্ট আনুষ্ঠানিকভাবে লিডারশিপ ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন। তার পক্ষে মনোনয়নের সংখ্যা ২১।
সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদে আগ্রহী প্রার্থীকে ১০০টি মনোনয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
টরি এমপিদের (কনজার্ভেটিভ দল) ৩৫৭টি ভোটের মধ্যে কেউ যদি ১৫৬টি ভোট পেয়ে যান, তাহলে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন দুই প্রার্থীতে কমে আসবে। কারণ তখন তৃতীয় প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার জন্য এমপির সংখ্যা যথেষ্ট থাকবে না।
এরপর তা কনজার্ভেটিভ দলের সদস্যদের অনলাইন ভোটে যাবে। আগামী শুক্রবার ফলাফল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
কিন্তু দলটির এমপি'রা যদি একজনকেই পছন্দ করেন, তাহলে এ সোমবারের মধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী পেয়ে যেতে পারে ব্রিটেনের জনগণ।
বিবিসি'র হিসাব অনুযায়ী, বরিস জনসন ইতোমধ্যে ৪৭ জন এমপি'র মনোনয়ন পেয়ে গেছেন। তবে বাস্তবে এ সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।
অবশ্য জনসনের আবারও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়ে তার দলের অনেকেই নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। তারা বলছেন, এমনটা হলে কনজার্ভেটিভ দল একটি 'মরণ প্যাঁচ'-এর মধ্যে পড়ে যাবে।
গত বৃহস্পতিবার (অক্টোবর ২০) পদত্যাগ করেন লিজ ট্রাস। ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে দেওয়া বিবৃতিতে ট্রাস বলেন, তিনি নির্বাচনী ম্যানডেট পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
ঋষি সুনাক: জনপ্রিয় হয়েও হেরেছিলেন গতবার
গত জুলাইয়ে বরিস জনসনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে 'জনপ্রিয়' ছিলেন ঋষি সুনাক। কিন্তু সেপ্টেম্বরের ফলাফলে লিজ ট্রাসই শেষ হাসি হাসেন।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন সুনাক। তার কয়েক সপ্তাহ পরই করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হয়। তখন ব্রিটেনের অর্থনীতিকে সামলানোর গুরুদায়িত্ব পড়েছিল তার কাঁধে।
২০২০ সালে ব্রিটিশ জনগণের জন্য ৩৫০ বিলিয়ন পাউন্ড সাহায্যের ঘোষণা দেন সুনাক। তখন তার জনপ্রিয়তাও আকাশ ছুঁয়েছিল।
৪২ বছর বয়সী এ রাজনীতিবিদের জন্ম সাউদাম্পটনে। পড়ালেখা করেছেন উইনচেস্টার কলেজে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানে।
পূর্ব আফ্রিকা থেকে তার ভারতীয় বংশোদ্ভূত মা-বাবা যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন। তার বাবা ছিলেন একজন চিকিৎসক, আর মা স্থানীয় একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতেন।
২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত গোল্ডম্যান স্যাকস-এর বিশ্লেষক হিসেবে কাজ করেছিলেন সুনাক। ব্রিটেনের অন্যতম ধনী আইনপ্রণেতা হিসেবে মানা হয় সুনাককে। তবে নিজের সম্পদের তথ্য কখনো প্রকাশ করেননি তিনি।
২০১৫ সাল থেকে ইয়র্কশায়ারের রিচমন্ডের এমপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সুনাক। বরিস জনসনের শাসনামলে প্রথমে তাকে সমর্থন করলেও পরে বরিসের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নেন সুনাক।