লকডাউনে স্থবির নারায়ণগঞ্জ, সতর্ক অবস্থানে পুলিশ
করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ন্ত্রণের জন্য নারায়ণগঞ্জে তৃতীয় দিনের মতো লকডাউন চলছে। নতুন করে কেউ যেন জেলায় ঢুকতে না পারে সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে বসানো হয়েছে চেকপোষ্ট। সেখানে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হলে তাকে সতর্ক করে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
লকডাউনের তৃতীয় দিনে নারায়ণগঞ্জ শহর ও অলিগলিতে লোক সমাগম ছিল খুবই কম। রাস্তা ছিল পুরো ফাঁকা, সুনসান নীরবতা। শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশের টহল ছিল লক্ষণীয়।
এদিকে লকডাউন ঘোষণার পর অনেকেই কৌশলে সড়ক ও নদীপথে কর্মক্ষেত্র নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে নিজ নিজ জেলায় ফিরে গেছেন।
নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম জানান, সড়ক ও নদীপথে কেউ যেন জেলা থেকে বের হতে না পারে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল জোরদার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে ৩০ থেকে ৪০ জন মানুষ একটি ট্রাকে করে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাড়ছিলেন। পুলিশ তাদের আটক করেছে। এছাড়া মুন্সীগঞ্জ থেকে কাভার্ডভ্যানে করে কিছু লোক নারায়ণগঞ্জে আসার সময় তাদেরকে ফতুল্লায় আটক করো হয়। এ সময় তাদেরকে সতর্ক করে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। জেলায় ঢোকার ও বের হওয়ার সকল রাস্তায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কেউ বের হতে বা ঢুকতে পারবে না।
এদিকে পুলিশের পাশাপাশি সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী ও র্যাব। র্যাব-১১ আদমজী কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলেপ উদ্দীন জানান, শুক্রবার জুমার নামাজের সময় মসজিদগুলোতে যেন জনসমাগম না হয় সেজন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শবে বরাতের রাতে যারা মসজিদে জড়ো হয়েছিল তাদেরকে সতর্ক করে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল।
এদিকে গত ৮ মার্চ থেকে নারায়ণগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে ৭৭ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ১০ জন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জের সিভিল সার্জন ইমতিয়াজ আহমেদ।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার কারণে নগরীর খানপুর ৩০০শয্যা হাসপাতালকে করোনা ইউনিট হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মৌখিকভাবে টেলিফোন করে এবং চিঠি দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আগামী ২/৩ দিনের মধ্যেই খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালের করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া শুরু হবে। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করে রাজধানীর আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। খানপুর ৩০০ শয্যা হাসপাতালকে করোনা ইউনিট ঘোষণা করার কারণে এখন থেকে সাধারণ রোগীরা নগরীর নিতাইগঞ্জে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল (ভিক্টোরিয়ায়) চিকিৎসা নিতে পারবেন।
সিভিল সার্জন সাধারণ রোগীদের ৩০০ শয্যা হাসপাতালে না এসে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে অনুরোধ জানান।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালে করোনা রোগীদের পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপন ও কিট প্রদানের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
নারায়ণগঞ্জে করোনা রোগীর পরীক্ষাগার স্থাপনের দাবি করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ।