উসমান ঝড়ে ম্লান আজম খানের সেঞ্চুরি, চট্টগ্রামের রোমাঞ্চকর জয়
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ম্যাচে মুখোমুখি হলো চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও খুলনা টাইগার্স। এগারো এগারোতে বাইশের লড়াই। কিন্তু লড়াই হলো দুজনের মধ্যে, আর সেটা দুজন পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানের মধ্যে। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করে খুলনাকে বড় সংগ্রহ এনে দেন আজম খান। পরে তারই স্বদেশী উসমান খান করলেন চোখ ধাঁধানো ব্যাটিং, সেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ টপকে চট্টগ্রামকে এনে দিলেন রোমাঞ্চকর এক জয়।
সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে রান বন্যার ম্যাচে খুলনাকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। বড় হারে আসর শুরু করা দলটি বড় জয় দিয়েই ছন্দে ফিরলো। ২ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চার নম্বরে আছে শুভাগত হোমের দল। তাদের আজকের প্রতিপক্ষ খুলনা টানা দুই ম্যাচে হারলো। দুই ম্যাচে হারলেও রান রেটের কারণে তাদের অবস্থান পাঁচ নম্বরে। সমান দুটি ম্যাচ হারা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স তলানীর দল। ছয় নম্বরে আছে ফরচুন বরিশাল।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা খুলনাকে একাই পথ দেখান টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া আজম। তামিম ইকবাল ধীর গতিতে মাঝারি ইনিংস খেলে আউট হলেও খুনে ব্যাটিংয়ে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছে যান আজম। তার ব্যাটেই ৫ উইকেটে ১৭৮ রান তোলে খুলনা। জবাবে উদ্বোধনী জুটিতে ম্যাক ও'দাউদের সঙ্গে ১৪১ রানের জুটি গড়া উসমান ঝলমলে সেঞ্চুরিতে চট্টগ্রামকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। পাকিস্তানি এই ক্রিকেটারেরও এটা টি-টোয়েন্টির প্রথম সেঞ্চুরি।
বড় লক্ষ্যে চট্টগ্রামকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার উসমান ও ম্যাক্স ও'দাউদ। শুরুটা ধীর-স্থির করলেও ক্রমেই রান তোলার গতি বাড়ান তাড়া। পাওয়ার প্লে ৬ ওভার তেকে ৫০ রান তোলেন এ দুজন। পাওয়ার প্লে ছাড়িয়ে একই ছন্দে ব্যাটিং করে যেতে থাকেন তারা। উসমান-ও'দাউদের সামনে বাধার দেয়াল তুলতে পারেননি খুলনার কোনো বোলারই।
উদ্বোধনী জুটিতে ১৫ ওভারে ১৪১ রান যোগ করেন এ দুজন। ও'দাউদের বিদায়ে ভাঙে এই জুটি। ফেরার আগে ৫০ বলে ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৮ রানের ইনিংস খেলেন নেদারল্যান্ডসের এই ব্যাটসম্যান। এরপর আফিফ হোসেনকে এক পাশে রেখে তাণ্ডব চালিয়ে চট্টগ্রামকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান ম্যাচসেরা উসমান। পাকিস্তানের ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান ৫৮ বলে ১০টি চার ও ৫টি ছক্কায় হার না মানা ১০৩ রান করেন। চট্টগ্রামের যাওয়া একমাত্র উইকেটটি নেন খুলনার স্পিনার নাহিদুল ইসলাম।
এর আগে ব্যাটিং করা খুলনার ইনিংসে সবচেয়ে বড় নাম আজম খানের। উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান চার নম্বরে নেমে একাই দলের স্কোরকার্ডের চেহারা পাল্টে দেন। তামিম ইকবাল ৩৭ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৪০ রান করার পর আজমই খুলনাকে এগিয়ে নেন।
পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার মঈন খানের ছেলে আজম ৫৮ বলে ৯টি চার ও ৮টি ছক্কায় ১০৯ রানের চোখ ধাঁধানো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। সাব্বির রহমান ১০ রান করেন, বাকিদের কেউ দুই অঙ্কের রান করতে পারেননি। চট্টগ্রামের আবু জায়েদ রাহি ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান শুভাগত হোম, জিয়াউর রহমান ও বিজায়াকান্ত।