'আমরা সাতজন ছিলাম কিন্তু আল্লাহ সিয়ামকে কেড়ে নিলেন'
মঙ্গলবার গুলিস্তানে ভবন বিস্ফোরণে হতভাগ্যের সর্বশেষ শিকার ১৮ বছরের তরুণ মুহাম্মদ সিয়াম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতরাতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন সিয়াম।
বিস্ফোরণে আহত-নিহতদের স্বজনেরা মঙ্গলবার বিকেল থেকেই ঢামেকের জরুরি বিভাগে ভিড় করেছিলেন।
হাসপাতালের ফ্লোরে তীব্র আর্তনাদ আর হাহাকারের মধ্যেই আলাদা করে চোখে পড়ে ছয় তরুণের একটি দলকে। এরা সবাই সিয়ামের ছোটবেলার বন্ধু। তাদের আহাজারিতে হাসপাতালে উপস্থিত সবার চোখ ভারী হয়ে ওঠে।
ছয় বন্ধুর একজন রাতুল কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "আমার নিজের কোন ভাইবোন নেই। সাতটা বন্ধু ছিলাম আমরা। এখন আল্লাহ আমাদের একজনকে কেড়ে নিলেন।"
দিনমজুর বাবা মোঃ দুলাল মিয়ার ছেলে সিয়াম পরিবারের ভরণপোষণের জন্য পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের একটি স্যানিটারি দোকানে চাকরি নেন।
সিয়াম যে স্যানিটারি দোকানে কাজ করতেন, সেটি বিস্ফোরণের শিকার পাঁচতলা ভবনের নিচতলায় ছিল। ফায়ার সার্ভিসের মতে, বিস্ফোরণের সূত্রপাত স্যানিটারি দোকানেই যার কারণে বাকি চারতলাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
রাতুল, ইয়াসিন, ইব্রাহিম, আকাশ, সাকিব ও জুবায়ের- সিয়ামের সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল তার এই ছয় বন্ধু।
মঙ্গলবার দ্রুত কাজ সেরে ছয় বন্ধু মিলে একসাথে শবে বরাতের নামাজ আদায় করবে-এমনটাই কথা ছিল।
কিন্তু বিস্ফোরণের পর থেকে সিয়ামকে আর খুঁজে পাওয়া যায় নি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজ সকালে হাসপাতালের মর্গে সিয়ামের প্রাণহীন দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।