পৃথিবীব্যাপী শিশু মৃত্যু বাড়বে আশঙ্কাজনক হারে: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
সঙ্কট পৃথিবীকে যেন চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলেছে। এর জন্য দায়ি কোভিড-১৯ ভাইরাসের চলমান বৈশ্বিক মহামারি। এই সঙ্কটের মাত্রাও বহুমুখী, প্রভাব অনেক গভীরে। তা সেটা সামাজিক পর্যায়ে হোক, বা দেশ-বিদেশের অর্থনীতিতে। বিপর্যয়ের একদিক সামাল দিতেই যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নতুন আরেক বিপদ।
গত সোমবার এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও বা হু)। জাতিসংঘের বৈশ্বিক জনস্বাস্থ্য বিষয়ক অভিভাবক সংস্থাটি জানায়, করোনাভাইরাস রোধে চলমান লকডাউন এবং এই জন্য অন্যান্য রোগের টিকাদান কর্মসূচী বন্ধ থাকায় বিশ্বব্যাপী শিশুদের অকালমৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে চলেছে।
অধিকাংশ মৃত্যুই হতে পারে পোলিও, হাম এবং ম্যালেরিয়ার মতো প্রচলিত রোগে। এসব রোগের জীবাণু টিকাহীন লাখো শিশুর জীবন কেড়ে নিতে সক্ষম। তাই টিকার কোনো বিকল্প নেই।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে ইতোমধ্যেই ২১টি দেশে প্রয়োজনীয় টিকার সঙ্কটও দেখা দিয়েছে। এসব দেশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে তাদের বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করেছে। খবর সিএনবিসির
গতকাল সোমবার জেনেভায় হু'র প্রধান কার্যালয় থেকে সম্প্রচারিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এমন আশঙ্কা তুলে ধরে সকল দেশকে সতর্ক করেন সংস্থাটির মহাসচিব টেড্রোস আঢানম ঘেব্রেইসুস। তিনি বলেন, 'নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে চলমান পরিস্থিতির পরিণতি হিসেবে শিশুরা মারা যাবে।'
ড. ঘেব্রেইসুস বলেন, 'সাব-সাহারা অঞ্চলের অতি-দরিদ্র দেশগুলো টিকার জন্য সরাসরি বিদেশী সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু চলমান ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রচলিত অনেক রোগের টিকা পরিবহনও বন্ধ আছে। বন্ধ আছে রাষ্ট্রীয় টিকাদান কর্মসূচী। এর ফলে কিছু কিছু দেশে এসব রোগের বিরুদ্ধে স্থায়ী প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে সাব-সাহারা অঞ্চলে ম্যালেরিয়ায় শিশু মৃত্যু হার দ্বিগুণ হতে পারে।'
নতুন এই বিপদ মোকাবেলায় সদস্য দেশগুলোকে আগেভাগেই তাদের সরকারি টিকাদান কর্মসূচীতে অর্থায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান হু মহাসচিব। প্রচলিত টিকা উৎপাদন এবং তা পুরো পৃথিবীতে সঠিকভাবে প্রয়োগ করে ৩০ কোটি শিশুকে স্থায়ীভাবে সুরক্ষিত করার কথা বলেছেন তিনি। ২০২৫ সাল নাগাদ এ পরিমাণ টিকাদানের জন্য খরচ করতে হবে ৭৪০ কোটি মার্কিন ডলারের সম-পরিমাণ অর্থ।
'টিকাদানের গতি স্তিমিত হয়ে পড়লে, তাতে নানা প্রকার রোগ-ব্যাধির প্রাদুর্ভাব দেখা দেবে' বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।