মানহানি মামলার জেরে কারাদণ্ডের পর কী কী সুবিধা হারাবেন রাহুল গান্ধী?
সাধারণত, প্রাক্তন সাংসদদের সময় দেওয়া হয় বাংলো খালি করার জন্য। তবে লোকসভা হাউজ প্যানেল শীঘ্রই রাহুল গান্ধীকে এই বাংলো ছাড়ার জন্য নোটিশ ধরাতে পারে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালে উত্তরপ্রদেশের অমেঠী থেকে সাংসদ হওয়ার পরই ওই বাংলো পান তিনি। ২০১৯ সালে আমেঠিতে হারলেও কেরলের ওয়ানাড আসন থেকে জিতে সংসদে গিয়েছিলেন রাহুল গান্ধী।
রাহুল গান্ধী মাসিক ১.৯ লাখ টাকা ভাতা পাবেন না এই মাস থেকে। তবে প্রাক্তন সাংসদ হিসেবে বেসিক ২৭ হাজার টাকা মাসিক ভাতা, এবং যতবারের সাংসদ, ততোবারের জন্য ৫ হাজার টাকা করে পাবেন। অর্থাৎ, চারবারের সাংসদ হওয়ায় প্রাক্তন সাংসদ ভাতার পাশাপাশি অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা করে পাবেন রাহুল গান্ধী। রাহুল ২০০৪, ২০০৯, ২০১৪ সালে আমেঠি থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০১৯ সালে কেরালার ওয়ানাড থেকে নির্বাচিত হন তিনি।
রাহুল গান্ধীর লাল রঙের ডিপ্লোম্যাটিক পাসপোর্ট খারিজ হয়ে যাবে। এই পাসপোর্টের ফলে রাহুল অনেক অনায়াসে ইমিগ্রেশন পার করতে পারতেন। বছরে ৩৪টি ফ্রি বিমান যাত্রার সুযোগও আর পাবেন না। তবে প্রাক্তন সাংসদ হিসেবে বিনামূল্যে রেল যাত্রা করতে পারবেন তিনি। তার সঙ্গে এক সঙ্গীকেও বিনামূল্যে নিতে পারবেন রাহুল। তাকে দেওয়া জেড প্লাস নিরাপত্তা হয়তো কমানো হবে না। কারণ সেটা তিনি সাংসদ হিসেবে পান না, বরং তার জীবনের ঝুঁকি পর্যালোচনা করে সেই নিরাপত্তা তাকে দেওয়া হয়।
গত পরশু গুজরাটের আদালত রাহুল গান্ধীকে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। এরপরই রাহুলের সাংসদপদ খারিজ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল। এরপরই গতকাল লোকসভার সচিবালয় থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে কংগ্রেস নেতার সাংসদপদ খারিজের কথা ঘোষণা করা হয়। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের প্রচারের সময় এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করে রাহুল বলেছিলেন, 'সব মোদীরা কেন চোর হয়?' এতে 'মোদী' পদবীর সকলের অপমান হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এই মর্মে সুরাটের এক আদালতে রাহুল গান্ধীর নামে মামলা হয়েছিল। সেই মামলারই রায়দান করে আদালতের তরফে জানানো হয়, রাহুল গান্ধী দোষী।
আইন অনুযায়ী, কোনও জনপ্রতিনিধি যদি দুই বা তার অধিক বছরের জন্য কারাদণ্ডের সাজায় দণ্ডির হন, তবে তৎক্ষণাৎ তার পদ খারিজ হবে। এই কারণে রাহুল গান্ধীর সাংসদপদ খারিজ হয় আজ। এদিকে রাহুল দায়রা আদালতের এই নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সরাসরি হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারবেন না, কারণ এটা ফৌজদারী মামলা ছিল। তবে বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা উল্লেখ করে কংগ্রেস গুজরাট হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে।