ওসি প্রদীপের সম্পদের খোঁজে ভারতসহ ৭ দেশে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক
অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ওসি (বরখাস্ত) প্রদীপ কুমার দাশের সম্পদের খোঁজে সাতটি দেশে চিঠি পাঠিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, দেশের বাইরে ওসি প্রদীপের কোনো সম্পদ আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে সাতটি দেশে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) মাধ্যমে গত মাসে সাত দেশের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে এই চিঠি পাঠানো হয়।
এই কর্মকর্তা জানান, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকিকে সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। কিন্তু জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে মিথ্যা তথ্য দেন চুমকি। এতে প্রদীপের সম্পদের হিসাব মিলেনি। তাই দেশের বাইরে তিনি (প্রদীপ) সম্পদ গড়েছেন কি না তা জানতে ভারত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই দেশগুলো থেকে তথ্য পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই কক্সবাজার জেলার টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ হত্যা মামলায় প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এ রায় দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে তিন কোটি ৯৫ লাখ পাঁচ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও অর্থপাচারের অভিযোগ আনা হয়।
২০২২ সালের ২৭ জুলাই দুদকের দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক প্রদীপ কুমার দাশকে ২০ বছর ও তার স্ত্রী চুমকিকে ২১ বছর কারাদণ্ড দেন। একই সঙ্গে প্রদীপের ঘুষের টাকায় চুমকির নামে নেওয়া কোটি টাকার বাড়ি, গাড়ি ও ফ্ল্যাট রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করেন আদালত।
ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি বর্তমানে কারাগারে বন্দি আছেন।