২ মাসে হিট স্ট্রোকে ২০ জনের মৃত্যু: দুর্যোগ ফোরাম
হিট স্ট্রোক করে সারাদেশে এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ২০ জনের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ফোরাম।
এর মধ্যে শিশু ১ জন, নারী ৫ জন এবং পুরুষ ১৪ জন। বেশিরভাগই নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ।
সংগঠনটি জানায়, সারা দেশের উপর দিয়ে গত ২ মে থেকে শক্তিশালী তাপপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে। তীব্র এই গরমে কিছু ভুল পদক্ষেপ বিপদকে আরও বাড়িয়ে তোলে বলে উল্লেখ করে দুর্যোগ ফোরাম।
তারা আরও বলেছে, এই সময় নিরাপদ পানি পান করা, বাইরের খাবার পরিহার করার পাশাপাশি কিছু সতর্কতা বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।
তাপদাহে হিট স্ট্রোক থেকে সুরক্ষিত থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ।
তিনি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, হিট স্ট্রোকের মূল ঝুঁকি মূলত যারা অনেকক্ষণ রোদে কাজ করে তাদের।
"মানবদেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়," বলেন তিনি।
"বডির টেম্পাচার বাড়তে বাড়তে ১০৫ এর উপর উঠলে ঘাম হয়না, মাথা ব্যথা, অস্থিরতা, বুক ধরফর, ক্লান্তি, অবসাদ হয়। এক সময় অজ্ঞানও হওয়ার মত অবস্থা হয়, অজ্ঞানও হয়ে যায় অনেকে,"
"এটি বিপদজনক। এটি খুবই সিরিয়াস, সাথে সাথে চিকিৎসা না দিলে রোগী মারাও যেতে পারে," বলেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, অপ্রয়োজনে কারো বাইরে বের হওয়া উচিত না। শ্রমিক, দোকানদার, রিকশাচালকসহ যারা বাইরে কাজ করেন তাদের অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করতে হবে।
কাজের ফাঁকে এক দুই ঘণ্টা পর পর ১০-১৫ মিনিটের জন্য ছায়াযুক্ত স্থানে বসার পরামর্শ দেন তিনি। লবন মিশ্রিত পানি খাওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। ডিহাইড্রেশন যাতে না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে বলে উল্লেখ করেন এই চিকিৎসক।
"আরেকটা জরুরি বিষয় হলো, ঢিলেঢালা কাপড় পরতে হবে। এসময় জিন্স না পরাই ভালো," যোগ করেন তিনি।
হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে করণীয় কী- সে বিষয়ে অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, কেউ যদি হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় তাহলে তাকে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াযুক্ত স্থানে নিতে হবে। ঘরে থাকলে ফ্যান ও এসি চালু করে তাকে ঠাণ্ডা স্থানে রাখতে হবে। ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে দিতে হবে। বেশি বেশি পানি, ফলের জুস পান করাতে হবে।
আক্রান্ত ব্যক্তির প্রেশার কমে যাওয়া, পালস কমে যাওয়া বা অজ্ঞান হয়ে গেলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিতেও পরামর্শ দেন তিনি।
শিশুদের বিষয়ে ডা আবদুল্লাহ বলেন, গরমে শিশুদের জন্যও ঝুঁকি বেশি।
"এখন স্কুল বন্ধ তাই শিশুদের বাইরে বের না করাই ভালো। তাদের বেশি বেশি পানি খাওয়াতে হবে। তারা যেন রোদের মধ্যে অনেক বেশি দৌড়ঝাঁপ না করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে," বলেন তিনি।