লোডশেডিংয়ের কারণে ঢাকায় পানির সংকট: ওয়াসা এমডি
ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে মূলত ঢাকায় পানি সংকট দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান।
বৃহস্পতিবার কারওয়ান বাজার ওয়াসা ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তাকসিম বলেন, পানি সরবরাহ করতে না পারায় ঢাকা ওয়াসার কোনো দোষ নেই।
ওয়াসা এমডি বলেন, ঘন ঘন বিদ্যুৎবিভ্রাটের কারণে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, ঢাকা ওয়াসার উৎপাদনের ইকুইপমেন্ট বা যন্ত্রপাতিতে কোনো সমস্যা নেই। শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি না পাওয়ার একমাত্র কারণ লোডশেডিং।
দেশে পানির উৎপাদন বড় চ্যালেঞ্জ নয় স্বীকার করে নিয়ে তাকসিম বলেন, পানি সরবরাহ করার জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন।
কিন্তু কিছু দিন ধরে তারা ঠিকমতো বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর ফলে তাদের পাম্পগুলো বন্ধ থাকছে। পানিতে প্রেশার দিয়ে সরবরাহ করা যাচ্ছে না লোডশেডিংয়ের কারণে। পাম্পের ডিপ টিউবয়েলগুলো বন্ধ থাকছে। ফলে পানি পৌঁছানো যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা ওয়াসার ১০টি জোনের মধ্যে ৪টি জোনে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
তবে এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও পানি সরবরাহ করতে ৪৮টি গাড়ি দিয়ে ঢাকা ওয়াসা সার্বক্ষণিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তাকসিম। পাশাপাশি তারা জেনারেটর দিয়ে পাম্পগুলোকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টাও করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ওয়াসা এমডি বলেন, 'গতকাল ২৪০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করা গেছে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে প্রেসার দিয়ে পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি বিভিন্ন এলাকায়। আশা করছি লোডশেডিংটা কমে গেলে, আমরা সঠিকভাবে বিদ্যুৎ পেলে আর পানির সমস্যা থাকবে না।'
ঢাকা ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, চাহিদার তুলনায় বেশি পানি উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে সংস্থাটির। শীতকালে সাধারণত রাজধানীতে দৈনিক পানির চাহিদা থাকে ২১০ কোটি লিটার থেকে ২৩০-২৪০ কোটি লিটারের। কিন্তু গ্রীষ্মকালে এ চাহিদা বেড়ে ২৬০ কোটি লিটারে গিয়ে দাঁড়ায়।
বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার প্রতিদিন প্রায় ২৯০ কোটি লিটার পানির উৎপাদনের সক্ষমতা আছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন এখন গড়ে ২৬০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার পানি শোধনাগার রয়েছে ৫টি। তবে সংস্থাটি পানি পাচ্ছে ৪টি শোধনাগার থেকে। চলতি বছরে উপরিতলের পানির উৎপাদন ৭০ শতাংশে উন্নীত করার কথা থাকলেও সেই লক্ষ্য এখনও পূরণ করতে পারেনি ঢাকা ওয়াসা। বর্তমানে উপরিতলের পানি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৩৫ শতাংশ। আর বাকি ৬৫ শতাংশ পানি তারা পাচ্ছে ভূগর্ভস্থ থেকে।