মৃত্যুর চারদিন পর জানা গেল করোনা পজিটিভ!
জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত এক ব্যবসায়ীর নমুনা সংগ্রহের পাঁচদিন পর রিপোর্ট মিলেছে। আর সেই রিপোর্টে নিশ্চিত হওয়া গেছে, তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। কিন্তু রিপোর্ট আসার চারদিন আগেই মারা গেছেন ওই ব্যবসায়ী।
নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার গাগলাজুর ইউনিয়নের চৌরাপাড়া গ্রামের ওই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর নাম গৌরাঙ্গ চন্দ্র পাল (৪৫)। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন।
এ সময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবে পাঠায়। কিন্তু ওই নমুনার রিপোর্ট আসে পাঁচদিন পর, মঙ্গলবার রাতে। পরীক্ষায় তার কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়ে। কিন্তু এর চারদিন আগেই শুক্রবার সন্ধ্যায় মোহনগঞ্জ পৌরসদরে ভাগ্নের বাসায় মারা যান তিনি।
জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্র জানায়, নেত্রকোনায় শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীদের মধ্যে তিনিই প্রথম মারা যাওয়া ব্যক্তি।
সিভিল সার্জন ডা. তাজুল ইসলাম খান বিষয়ের সত্যতা স্বীকার করে জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার ওই ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হলেও ময়মনসিংহের ল্যাব থেকে রিপোর্ট এসেছে মঙ্গলবার রাতে। ল্যাবের ক্যাপাসিটি কম থাকায় নমুনার জট সৃষ্টি হয়েছে, আর এ কারণে চার-পাঁচদিন পরে রিপোর্ট আসছে বলে জানান তিনি।
সিভিল সার্জন বলেন, ওই ব্যবসায়ীর নমুনা সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তিনি মোহনগঞ্জ পৌর শহরের তার ভাগ্নের বাসায় ছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। সতর্কতা অবলম্বন করে তার দাহ সম্পন্ন করা হয়েছিল। এ ছাড়া তিনি যে বাসায় মারা গেছেন, সে বাসার চারজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে।
জানা গেছে, স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ মৃত ব্যবসায়ীর পরিবারের সদস্যদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে। এছাড়া তার সংস্পর্শে আসা আত্মীয়-স্বজনদের শনাক্ত করছে।
মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত নেত্রকোনার ১০ উপজেলা থেকে এক হাজার ৭৮০টি নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৫৩৮টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। জেলায় এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ জন। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৩১ জন।