বিশ্লেষণ জানাচ্ছে, প্রিগোজিনের পরচুলা পরা ছদ্মবেশের ছবি আসল
রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিন প্রিগোজিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে রুশ সরকার। গত শুক্রবার পরিচালিত এ অভিযানে সেন্ট পিটার্সবার্গের অবস্থিত বাড়িটি থেকে বেশ কিছু রহস্যময়য় জিনিস জব্দ করেছে দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা।
অভিযান শেষে গোয়েন্দা সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রিগোজিনের আলমারি ভর্তি পরচুলা ও নকল দাড়ির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। একইসাথে ওয়াগনার বসের ব্যক্তিগত অ্যালবাম থেকে পরচুলা পরে ছদ্মবেশ ধারণ করা বেশ কয়েকটি ছবিও উদ্ধার করা হয়েছে।
একটি ছবি দেখা যায়, নকল দাড়ি লাগিয়ে ওয়াগনার বস লিবিয়ার ন্যাশনাল আর্মির পতাকার সামনে সামরিক পোশাক পরে দাঁড়িয়ে আছেন। ছবিটি কোনো একটি বিমান ঘাঁটিতে তোলা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চলতি সপ্তাহের শুরুতে প্রিগোজিনের এমন বিতর্কিত কয়েকটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পরেছে। তবে প্রথমদিকে অনেকেই ভেবেছিলেন ওয়াগনার বসকে হাসির পাত্র বানাতে এডিট করে হয়তো এসব ছবি প্রচার করা হচ্ছে।
তবে প্রাথমিক বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, ছবিগুলো আসলে এডিট নয়। বরং স্মার্টফোনের মতো ডিজিটাল কোনো ডিভাইসের মাধ্যমেই ছবিগুলো তোলা হয়েছে। কেননা ছবিগুলো পর্যালোচনা করে রেইনবো পিক্সেলেশনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে।
ছবিগুলোতে প্রিগোজিনের চেহারার গ্রানুলার ডিটেইলস (কপালে সূক্ষ্ম সুক্ষ রেখা এবং ভ্রুকুটির রেখা) বাস্তবের সাথে অনেকটা সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয়েছে। এমনকি ছবিতে থাকা গাঢ় স্বর্ণালী রঙের পরচুলার মতোই ওয়াগনার বসের আলমারিতে থাকা একটি পরচুলা হুবুহু মিলে যায়।
ছবিতে আলোর স্বল্পতা ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ কোণে সেলফি তোলা থেকে অনুমান করা যায় যে, ছবিগুলো আসল। তবে শতভাগ নিশ্চিত করে এ কথা বলা কঠিন।
অন্যদিকে গত ৬ জুলাই বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বলেছেন, ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহী নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোজিন এখন আর বেলারুশে অবস্থান করছেন না। এমনকি তার বাহিনী বেলারুশে অবস্থান করবে কি-না তাও নিশ্চিত নয়।
লুকাশেঙ্কোর এমন তথ্যের পর এখন গত মাসে বিদ্রোহের সমাপ্তি টানা চুক্তিটি নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। গত ২৭ জুন লুকাশেঙ্কো বলেছিলেন, চুক্তি অনুযায়ী প্রিগোজিন বেলারুশে পৌঁছেছেন।
এদিকে গত ২৩ জুন নিজের ওয়াগনার সেনাদের নিয়ে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন প্রিগোজিন। ইউক্রেন থেকে প্রায় ২৫ হাজার সেনা নিয়ে এদিন রাশিয়ায় প্রবেশ করেন তিনি। তবে খুব শীঘ্রই লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় বিদ্রোহ থামিয়ে দেন তিনি।