দাশেরকান্দিতে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম পয়ঃশোধনাগার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর আফতাবনগরের কাছে দাশেরকান্দিতে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম একক পয়ঃশোধনাগারের কার্যক্রম উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পয়ঃশোধনাগারটি দেশের প্রথম আধুনিক এসটিপি (স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট), যা ৫০০ মিলিয়ন লিটার পয়ঃনিষ্কাশন করার ক্ষমতাসম্পন্ন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, পরিবেশ দূষণ রোধ এবং রামপুরা খাল, বালু নদী, শীতলক্ষ্যা নদীসহ অন্যান্য জলাশয়ের পানির গুণগত মান উন্নয়নে প্লান্টটি ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
আফতাবনগর এলাকার পূর্বদিকে নির্মিত এই প্লান্টটি দেশের পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থায় একটি মাইলফলক হিসেবে প্রশংসিত হচ্ছে।
প্লান্টে প্রতিদিন প্রায় ৪৫ মেট্রিক টন ছাই উৎপন্ন হবে, যা সিমেন্ট কারখানায় কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে।
দশেরকান্দি এসটিপিতে রাজধানীর তেজগাঁও, নিকেতন, বাড্ডা, বনানী, গুলশান (অংশ), রমনা, ইস্কাটন, নয়াটোলা, মগবাজার, ওয়্যারলেস, মৌচাক, আউটার সার্কুলার রোড, মহানগর হাউজিং, হাতিরঝিল, কলাবাগান ও ধানমন্ডি (আংশিক) এলাকা থেকে আসা পয়ঃ প্রক্রিয়াকরণ করা হবে।
ঢাকা শহরে প্রতিদিন যে ২ হাজার মিলিয়ন লিটার বর্জ্য উৎপন্ন হয়, তার ২০-২৫ শতাংশ শোধন করতে পারবে দাশেরকান্দি প্লান্ট।
মঙ্গলবার ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান সাংবাদিকদের বলেন, আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে ঢাকায় উৎপাদিত পয়ঃ শতভাগ পরিশোধনের জন্য পাঁচটি এসটিপি নির্মাণে ওয়াসার গৃহীত মাস্টার প্লানের অংশ হিসেবে এই প্লান্টটি নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, প্লান্টটি আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব। প্লান্টে পরিশোধিত পানির গুণমান যথেষ্ট ভালো।
২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকা শহরের শতভাগ পয়ঃনিষ্কাশন সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে পাগলা, রায়েরবাজার, উত্তরা ও মিরপুরে আরও চারটি আধুনিক স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণ করা হবে।
এছাড়াও বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী পাগলা স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টটির সংস্কার কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
পাগলা স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টটির কাজ সম্পন্ন হলে ঢাকায় উৎপাদিত প্রায় ৪০ শতাংশ পয়ঃ শোধন করা যাবে।
৩ হাজার ৪৮২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬২ একর জমির উপর দাশেরকান্দি এসটিপি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এসেছে ১ হাজার ১০৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা, ঢাকা ওয়াসা থেকে এসেছে ১০ কোটি টাকা এবং চীনের এক্সিম ব্যাংক থেকে এসেছে ২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা।
২০১৮ সালের ১ জুলাই চীনের অর্থায়নে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়। এক বছরের জন্য প্লান্টটির পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা করে এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাইড্রোচায়না করপোরেশন।
প্রকল্পের রূপরেখা অনুযায়ী, রামপুরা সেতুর পশ্চিম পাশে একটি বর্জ্য উত্তোলন স্টেশন, রামপুরা থেকে আফতাবনগর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার ট্রাঙ্ক স্যুয়ের লাইন ও দশেরকান্দি প্লান্ট এবং দশেরকান্দিতে প্রধান শোধনাগার নির্মাণ করা হয়েছে।