মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে বেলারুশ ছাড়ার নির্দেশ যুক্তরাষ্ট্রের
বেলারুশে অবস্থানকৃত মার্কিন নাগরিকদের অবিলম্বে দেশটি ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসাথে বেলারুশ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও সতর্কতা জারি করেছে বাইডেন প্রশাসন।
মূলত গত জুনে পুতিনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহে ব্যর্থ হয়ে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ওয়াগনার সেনা বেলারুশে অবস্থান করছে। তারই ধারাবাহিকতায় পার্শ্ববর্তী দেশ লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া ও পোল্যান্ডের পক্ষ থেকেও উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
গতকাল (সোমবার) প্রকাশিত বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট বেলারুশকে 'লেভেল ৪' এর ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রা বিবেচনায় যা সর্বোচ্চ।
দীর্ঘদিন ধরে বেলারুশ শাসক হিসেবে থাকা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোকে অনেকে বর্তমানে ইউরোপের একমাত্র স্বৈরশাসক হিসেবে অভিহিত করে থাকেন। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের বেশ বিশ্বস্ত মিত্র।
বেলারুশের জনগণের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে লুকাশেঙ্কোর ওপর ইতোমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। ২০২০ সালেও একটি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতায় টিকে থাকার অভিযোগ রয়েছে তার বিরদ্ধে।
তারই ধারাবাহিকতায় বেলারুশে মার্কিন মিশন ছোট করে আনা হয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে মার্কিন নাগরিকদের জন্য শুধু জরুরি পরিষেবাগুলি চালু রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিবৃতিতে বলা হয়, "বেলারুশ ভ্রমণ করবেন না। কেননা দেশটির কর্তৃপক্ষ ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণকে সহায়তা করছে। দেশটিতে রাশিয়ান সামরিক বাহিনী গড়ে তুলছে। স্থানীয় আইনকে অন্যায়ভাবে প্রয়োগ করেছে। তাই বেলারুশে অস্থিরতা তৈরির সম্ভাবনা ও আটকের ঝুঁকি রয়েছে। একইসাথে দেশটিতে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রম সীমিত করার কারণে সেখানে অবস্থানকৃত মার্কিন নাগরিকদের সহায়তা করার ক্ষমতাও সীমিত রয়েছে।"
গত সপ্তাহে বেলারুশের সাথে থাকা লিথুয়ানিয়ার ছয়টি সীমান্তের মধ্যে দুটি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দেশটির সাথে পোল্যান্ড ও লাটভিয়ারও যথাক্রমে মাত্র একটি ও দুটি সীমান্ত চালু রয়েছে।
স্টেট ডিপার্টমেন্টের পক্ষ থেকে চালু থাকা এই সীমান্তগুলো দিয়ে মার্কিন নাগরিকদের বেলারুশ ত্যাগের জন্য বলা হয়েছে। একইসাথে সতর্ক করা হয়েছে যে, পোল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া ও লাটভিয়া সরকার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে চালু থাকা সীমান্তগুলোও যেকোনো সময় বন্ধ করে দিতে পারে।
বেলারুশ অংশের সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতে পোল্যান্ড ও লাটভিয়া সৈন্য সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। একইসাথে লুকাশেঙ্কোর বিরুদ্ধে দেশ দুটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসা অভিবাসীদের বেলারুশ দিয়ে সীমান্তের ওপারে পাঠানোর অভিযোগও এনেছে।