ডিভিডেন্টের টাকা পাচারের অভিযোগে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের মামলা
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের পাওনা কোম্পানির মুনাফার অংশ (ডিভিডেন্ট) না দিয়ে সেই টাকা পাচার করার অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ১৮ শ্রমিক।
এ মামলায় ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন আদালত। আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে সমনের জবাব দেয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৮ আগস্ট) সকালে ১৮ শ্রমিক তাদের পাওনা মুনাফার দাবি নিয়ে ঢাকার শ্রম আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। পরে শুনানি শেষে ঢাকার শ্রম আদালত-৩ এর বিচারক মেরিনা ইয়াসমিন এই আদেশ দেন।
ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন– মামলা হওয়ার বিষয়টি টিবিএসকে নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, 'এই মামলা হয়রানিমূলক মামলা। এটি আইনগতভাবে মোকাবিলা করা হবে। ২০০৬ সালের আগে যারা কর্মে নিয়োজিত ছিলেন, তাদের মধ্যে ১৮ জন শ্রম আদালতে এই মামলা করেছে।'
এর আগে গত ২২ আগস্ট শ্রম আইন লঙ্ঘনের আরেক মামলায় ড. ইউনূসের বিচার শুরু হয়।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে ঢাকার কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তর। ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে এ মামলা করেছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ড. ইউনূসের গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে গিয়ে সেখানে শ্রম আইনের কিছু লঙ্ঘন দেখতে পান। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে– ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী করার কথা থাকলেও, তাদের স্থায়ী করা হয়নি। শ্রমিকদের অংশগ্রহণের তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি। এ ছাড়া কোম্পানির লভ্যাংশের ৫ শতাংশ শ্রমিকদের দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আইনে এ মামলা করা হয়।
এ দুই মামলা ছাড়াও একই প্রতিষ্ঠিান গ্রামীণ টেলিকম থেকে শ্রমিক-কর্মচারীদের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গত ৩০ মে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গ্রামীণ টেলিকমের ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (WPPF) অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুদকের কাছে অভিযোগ করা হয়। পরে দুদক আইন ও বিধি মোতাবেক অনুসন্ধান করে– গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যানসহ বোর্ড সদস্যদের বিরুদ্ধে 'অসৎ উদ্দেশ্যে অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ করে পরস্পর যোগসাজশে' ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের সত্যতা পেয়ে এই মামলা করা হয় বলে দুদক জানিয়েছে।