বাবরী মসজিদ মামলার শুনানি আজ
অযোধ্যার বাবরি মসজিদের জমি নিয়ে সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি ভারতের সুপ্রিমকোর্টের মধ্যস্থতাকারী প্যানেল। তাই আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত কনস্টিটিউশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হবে।
২০১০ সালে অযোধ্যা মামলার শুনানিতে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ে ২.৭৭ একরের ওই জমি সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, হিন্দু মহাসভার রাম লাল্লা সংগঠন এবং নির্মোহী আখড়া সম্প্রদায়ের মধ্যে তিন ভাগে ভাগ করে দিতে বলা হয়। ওই জমির মালিকানা নিয়ে এর পর থেকে সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখড়া ভগবান রামচন্দ্রের (রাম লালা) শুরু হয় সেই বিবাদ।
আদালতের সেই রায়ের বিরুদ্ধে একাধিক আবেদন জমা পড়ে।
গত ১১ জুলাই মধ্যস্থতা কমিটির মধ্যে আলোচনা কতদূর এগিয়েছে তা ওই কমিটির কাছে জানতে চায় প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, এস এ বোবদে, ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, অশোক ভূষণ এবং আব্দুন নাজিরের সাংবিধানিক বেঞ্চ। মধ্যস্থতার প্রয়োজন না থাকলে ২৫ জুলাই থেকে মামলা শুরু করা যেতে পারে বলে জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রি দফতরে অযোধ্যা মামলার রিপোর্ট জমা দেয় মধ্যস্থতাকারী ওই কমিটি। রিপোর্টে তারা জানায় বিষয়টির মীমাংসা করতে তারা ব্যর্থ হয়েছে। এরপর প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ জানান আজ মঙ্গলবার থেকে প্রতিদিন মামলাটির শুনানি হবে।
১৯৯২ সালে হিন্দুরা ওই বিতর্কিত জায়গায় একত্রিত হয়ে মোগল সম্রাট বাবরের নামের ষোড়শ শতকের মসজিদটি ধ্বংস করে দেন। এ নিয়ে পরবর্তী দাঙ্গায় দুই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এ ছাড়া এই মসজিদ নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিতর্কে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। মুসলমানরা সেখানে নতুন একটি মসজিদ গড়তে চান। হিন্দুদের দাবি, সেখানে তাদের দেবতা রামের জন্ম হয়েছিল। কাজেই তারা সেখানে রামমন্দির নির্মাণ করতে চান।
১৫২৬ সালে মোগল সম্রাট বাবর মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। ১৮৮৫ সালে মসজিদ প্রাঙ্গণে হিন্দু ধর্মীয় সংস্থাগুলো দেবতা রামের সম্মানে একটি মন্দির নির্মাণের অনুমতি চাইলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
১৯৪৯ সালে একদল হিন্দু মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে রামের একটি মূর্তি স্থাপন করেন। কিন্তু সেটি না সরিয়ে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এ ছাড়া একজন হিন্দু ধর্মীয় গুরুকে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেয়া হয়।
১৯৮৬ সালে ফয়জাবাদ জেলা প্রশাসন মসজিদ প্রাঙ্গণ হিন্দুদের ধর্মীয় আচার পালনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়। এর পর ১৯৯২ সাল পর্যন্ত পরিস্থিতি বেশ শান্তই ছিল। কিন্তু ওই বছর বর্তমানে ক্ষমতাসীন বিজেপিসহ বিভিন্ন উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মসজিদটি ধ্বংস করে দেন।