‘সামাজিক ক্লাব সম্পর্কে ধারণা বদলাতে এই টুর্নামেন্ট’
গুলশান ক্লাবের উদ্যোগে তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে গুলশান ক্লাব অলিম্পিয়াড। আন্তঃ ক্লাব স্পোর্টস কার্নিভালে ১৮টি ক্লাব অংশ নিচ্ছে, ১৩টি খেলায় মোট ১৮টি ইভেন্ট রাখা হয়েছে। পুরো আয়োজনটির দেখভাল করছেন অলিম্পিয়াড অর্গানাইজিং কমিটির চেয়ারম্যানের পদে থাকা ডঃ ওয়াহিদুজ্জামান তমাল। তার মতে, সামাজিক ক্লাব সম্পর্কে মানুষের ভুল ধারণা আছে। সেই ধারণা বদলাতে এবং ক্লাবগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য বাড়াতে অলিম্পিয়াডের মতো আয়োজন করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ক্লাবে গল্প-গুজব বা আড্ডা দিয়ে সদস্যরা সময় কাটান, এমন ধারণা ঠিক নয় জানিয়ে ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, 'গুলশান ক্লাব, ঢাকা ক্লাব, উত্তরা ক্লাব বা বনানী ক্লাব; এসব ক্লাবে সামাজিক ক্লাবই বলা হয়। সবার ধারণা যে ক্লাবগুলো গল্প-গুজব, বসে আড্ডা দেওয়া; এসবই হয়। খেলাধুলা নিয়ে হয়তো তেমন কিছু নেই। মনে করে আড্ডাখানা, এই ধারণাকে বদলে দিতে এই আয়োজন।'
'আমরা যে আমাদের মনের বিকাশ, সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রচুর খেলাধুলার আয়োজন করে থাকি এবং একটা ক্লাবের সঙ্গে আরেকটি ক্লাবের ইনটারেকশন করে থাকি; মূলত এটার উদ্দেশ্য নিয়েই অলিম্পিয়াড আয়োজন করা| আমরা এখানে বসে শুধু আড্ডা দিই, তা নয়। আমরা নিজেরা খেলাধুলা করি এবং আমাদের সন্তানরাও এখানে প্রচুর খেলাধুলা করে। আমাদের ক্লাবগুলোতে জাতীয় পর্যায়ের অনেক সাবেক খেলোয়াড় আছে।' যোগ করেন তিনি।
প্রতি বছরই অলিম্পিয়াড আয়োজন করার পরিকল্পনা গুলশান ক্লাবের। ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, '১৪টি ক্লাব নিয়ে গুলশান ক্লাব অলিম্পিয়াড আমরা শুরু করি ২০১৯ সালে। কোভিডের কারণে অলিম্পিয়াড বন্ধ ছিল। ২০২২ সালে ১৫টি দিল নিয়ে আমরা দ্বিতীয় অলিম্পিয়াড করি। এ বছর ১৮টি ক্লাব অংশগ্রহণ করছে। গুলশান ক্লাবের বোর্ড অব ডিরেক্টরদের ইচ্ছা প্রতি বছরই এই অলিম্পিয়াড আয়োজন করার। এটা গুলশান ক্লাবের একটি সিগনেচার ইভেন্ট হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।'
প্রতি বছরই অলিম্পিয়াড নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গার ক্লাবগুলোর আগ্রহ বাড়ছে বলে জানান ওয়াহিদুজ্জামান। বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি ক্লাবও অলিম্পিয়াডে অংশ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, 'গত বছর ৭১৫ জন প্রতিযোগী অংশ নেন। এবার আমরা আশা করি, ৯০০'র বেশি প্রতিযোগী থাকবে। সব ক্লাব মিলিয়ে ২৫ হাজারের মতো সদস্য এটার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত হচ্ছে। কেউ নিজে খেলছে, না হলে তার ছেলে খেলছে, না হলে কারও বন্ধু খেলছে।'
'সত্যি বলতে এটা অনেক বড় ইভেন্ট। গত দুটি আসরের পর এবার আমরা বিভিন্ন ক্লাবের লোকজনের কাছ থেকে অনেক ফোন পেয়েছি অলিম্পিয়াড করব কিনা জানতে। ইতোমধ্যে ৯০০ জন রেজিস্ট্রেশন করেছে, আশা করছি ১ হাজার ছাড়িয়ে যাবে। আমাদের আশা প্রতি বছর ক্লাব বাড়বে। এখানে শুধু দেশি ক্লাবই নয়, বাংলাদেশে অবস্থিত বিদেশি ক্লাবও অংশ নিচ্ছে। অ্যামেরিকান ক্লাব, ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব, জার্মান ক্লাব অংশ নিচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরের ক্লাব তো আছেই।' বলেন তিনি।
অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে যাওয়া ঢাকার বাইরের ক্লাবের সদস্যদের থাকার ব্যবস্থা করবে আয়োজক গুলশান ক্লাব। বড় আয়োজন বলে খরচাটাও বড়। স্পন্সরদের থেকে পাওয়া অর্থে সফলভাবেই অলিম্পিয়াড আয়োজনের ব্যাপারে আশাবাদী ওয়াহিদুজ্জামান, 'ঢাকার বাইরের ক্লাবগুলোর থাকার ব্যবস্থা আমরা এখান থেকে করছি। বড় একটি আয়োজন, খচর তো ভালোই হবে। স্পন্সর যা আছে, সেটা দিয়ে হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। এবার প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে আছে ঢাকা ব্যাংক, ভাইয়া হাউজিং। গোল্ড স্পন্সর হিসেবে ওরিয়ন ফুটওয়্যার এবং প্রাইম ব্যাংক আছে।'