ইলেকট্রিক স্কুটারের মধ্যে কেন হোন্ডা মটোকমপ্যাক্টো সবার চেয়ে আলাদা?
বাজারে নানা ডিজাইনের ও বিভিন্ন দামের বহু বৈদ্যুতিক স্কুটার পাওয়া যায়। তবে সব ধরনের স্কুটারের থেকে হোন্ডার নতুন মডেল মটোকমপ্যাক্টো যেন একদমই ভিন্ন।
নতুন মডেলটি তৈরিতে ডিজাইনের ক্ষেত্রে হোন্ডা আপাতদৃষ্টিতে ইকিয়া ফার্নিচারের থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছে। এটির সিট, পেছনের চাকা, হ্যান্ডেল বার ফোল্ড করে বডির ভেতর ঢুকিয়ে রাখা যায়। ফলে স্কুটারটি এতটাই ছোট হয়ে যায় যে, কোনো লাগেজ কিংবা অন্য যানবাহনের ভেতরে রেখেও এটি নিয়ে চলাচল করা যায়।
নতুন মডেলটি তৈরির ক্ষেত্রে কোম্পানিটির মূল অনুপ্রেরণা ছিল ১৯৮০ দশকের আরেক মডেল হোন্ডা মটোকম্পো। আকারে খুবই ছোট মোটরসাইকেলটি ছিল গ্যাসে চালিত। এটিও অনেকটা আয়তক্ষেত্র আকারে ভাঁজ করে নেওয়া যেত।
পুরাতন হোন্ডা মটোকম্পোর দাম ছিল বর্তমানের ১০ হাজার মার্কিন ডলার সমপরিমাণের। যদিও ১৯৮০ এর দশকে ঐ মোটরসাইকেলটি খুব বেশি পরিমাণে বিক্রি হয়নি।
হোন্ডা মূলত মোটরসাইকেল কোম্পানি হিসেবে যাত্রা শুরু করে। পরবর্তীতে স্কুটার, মাঝারি আকারের পিকআপ ও জেট প্লেনও তৈরি করে।
সম্প্রতি হোন্ডার ক্যালিফোর্নিয়ার ডিজাইন স্টুডিও আগের ডিজাইনটির থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে নতুন ভার্সনটি স্কুটারের মডেল আকারে তৈরি করেছে। তবে এখন লিথিয়াম ব্যাটারির যুগ হওয়ায় ফোল্ডেবল বাইক বা স্কুটি তৈরি অনেকটাই সহজ।
তবুও বাজারে এমন ছোট আকারের একটি স্কুটার নিয়ে আসা হয়েছে মূলত কিছু সুবিধার কথা চিন্তা করে। ওজনের দিক থেকে এটি মাত্র প্রায় ৪১ পাউন্ড। এছাড়াও আকারে বেশ ছোট হওয়ায় এটিতে চলাচল করাও বেশ আরামদায়ক।
নতুন কেউ চালাতে গেলে স্কুটারটি প্রতি ঘণ্টায় ১০ মাইল গতিতে চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর এর সর্বোচ্চ গতি ধরা হয়েছে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার। সেদিক থেকে চিন্তা করলে এর গতি খুব একটা বেশি নয়।
এক চার্জে স্কুটারটি সর্বোচ্চ ১২ মাইল পর্যন্ত যেতে পারে। স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য অবশ্য এটিই যথেষ্ট।
স্কুটারটিতে মাত্র সাত সেকেন্ডের মধ্যে শূন্য থেকে ঘণ্টায় ১৫ মাইল গতিবেগ ওঠানো যাবে বলেও দাবি করেছে কোম্পানিটি। এছাড়াও, চার্জিং কর্ড এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সংরক্ষণের জায়গাও রয়েছে স্যুটকেস আকৃতির এই বাহনের মধ্যে।
দামের দিক থেকে অবশ্য স্কুটারটি মূল্য তুলনামুলক বেশ চড়া। প্রতিটি স্কুটারের দাম ৯৯৫ মার্কিন ডলার। তবুও স্টাইল ও বেশ কয়েকটি সুবিধা বিবেচনায় অনেকেই হয়তো এটি কিনতে চাইবে।
বর্তমানে স্কুটারটি শুধু একটি রঙেই পাওয়া যাচ্ছে। যার মূল বডি সাদা ও চামড়ার সিটটি বাদামী রঙের।
স্কুটার তৈরির উদ্দেশ্য ছিল ক্রেতারা যেন এটিকে সুবিধাজনক একটা জায়গায় পার্ক করতে পারেন। একইসাথে এই ক্ষুদে বাহনে করে শহরে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
হোন্ডা কোম্পানি মনে করে, এই মজার বাহনটি 'ট্রান্সপোর্টেশন-নার্ড' সম্প্রদায়, অর্থাৎ যারা পরিবহন-সংক্রান্ত সকল বিষয়ে অত্যন্ত উৎসাহী এবং এ সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন- তাদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করবে। একইসঙ্গে, মটোকমপ্যাক্টোর আওতায় ব্যাকপ্যাক, হেলমেট এবং পোশাকসহ নানা আনুষঙ্গিক জিনিস বাজারে নিয়ে আসার পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।