বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে চালানো ড্রোন হামলায় ‘ভুলে’ নিহত ৮৫ বেসামরিক নাগরিক
বিদ্রোহীদের লক্ষ্য করে নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীর চালানো একটি ড্রোন দুর্ঘটনাবশত একটি গ্রামে আঘাত হানলে এতে অন্তত ৮৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে।
নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিম কুদানা স্টেটের তুদুন বিড়ি নামে একটি গ্রামে বেসামরিকদের এক ধর্মীয় উৎসবে গিয়ে আঘাত করে ওই ড্রোন।
দেশটির সামরিক বাহিনীর তরফে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বিদ্রোহী গ্রুপকে নিশানা করে এই ড্রোন ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু সেটি সোজা গিয়ে গ্রামে আঘাত হানে। ওই সময় বাসিন্দারা একটি মুসলিম উৎসবে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানেই আছড়ে পড়ে ড্রোনটি। প্রেসিডেন্ট বোলা আহমেদ টিনুবু ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ না হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে হয়েছে, সব মিলিয়ে ৮৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। ড্রোন হামলায় নিহতদের মধ্যে অনেক মহিলা ও শিশু রয়েছে।
ন্যাশনাল ম্যানেজমেন্ট এজেন্সিও জানিয়েছে, সব মিলিয়ে ৮৫ জনের মরদেহ কবর দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অনেকে আহতও হয়েছে। প্রায় ৬৬ জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সামরিক বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনী মাঝেমধ্যেই সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের বিরুদ্ধে হামলা চালায়। এবারও তেমনই এক বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে লক্ষ্য ড্রোন ছাড়া হয়েছিল। কিন্তু দুর্ঘটনাবশত সেটি গিয়ে আঘাত করে গ্রামের উপর।
স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিশ দাহিরু সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, 'আমি তখন বাড়িতে ছিলাম। প্রথমে একটা বোম পড়ল। তারপর আবার একটা বোম পড়়ল।'
তিনি বলেন, 'আমার চাচি, আমার ভাইয়ের স্ত্রী ও তাদের ৬ সন্তান, আমার চার ভাইয়ের স্ত্রীরা মারা গেছে। আমার বড় ভাইয়ের পরিবারের সবাই মারা গেছে, শুধু বাচ্চাটা বেঁচে আছে। বোমা হামলায় নিহত ৮৫ জনকে কবর দিয়েছি আমরা।'
বোমা হামলায় আহত দানজুমা সালিসু হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে বলেন, 'আমরা দৌড়ে পালানোর সুযোগও পাইনি।'
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম অনুসারে, গ্রামবাসীরা আরও আক্রমণের ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। কুদুনা স্টেটের সেনা কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিরা গ্রামের প্রবীণদের সঙ্গে দেখা করে ভুক্তভোগীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।