আভিশকা-ক্যাম্ফারের দাপটে তামিমদের হারাল চট্টগ্রাম
ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ব্যাট হাতে ঝড় তুললেন আভিশকা ফার্নান্দো, খুনে ব্যাটিংয়ে খেললেন ৯০ ছাড়ানো ইনিংস। শেষ দিকে তাণ্ডব চালালেন কার্টিস ক্যাম্ফারও। তাতে ২০০ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ মেলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের। পরে বল হাতেও দাপট চললো ক্যাম্ফারের, বরিশালের যাওয়া সাতটি উইকেটেই রাখলেন সরাসরি অবদান। আহমেদ শেহজাদ, মেহেদী হাসান মিরাজদের ঝড়ো ব্যাটিং কাজে এলো না ফরচুন বরিশালের। রুদ্ধশ্বাস লড়াই শেষে দারুণ জয়ের দেখা পেল চট্টগ্রাম।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) শনিবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হাই-স্কোরিং ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ১০ রানে হারিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। চার ম্যাচে এটা তাদের তৃতীয় জয়, পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বরে আছে চট্টগ্রাম। দারুণ লড়েও জয়ের মুখ দেখা হচ্ছে না তামিম ইকবালের দল বরিশালের। চার ম্যাচের তিনটিতেই হারলো তারা।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা চট্টগ্রামের শুরুটা ভালো না হলেও একাই সব সামলে নেন আভিষকা। ইনিংসের শেষ পর্যন্ত দাপুটে ব্যাটিং করে যান তিনি। মাঝে শাহাদাত হোসেন দিপুর দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের পর শেষ দিকে ক্যামিও ইনিংস খেলেন ম্যাচসেরা ক্যাম্ফার। তাদের ব্যাটে ৪ উইকেটে ১৯৩ রান তোলে চট্টগ্রাম, যা চরতি আসরে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জবাবে শেহজাদের ব্যাটে দুর্বার শুরুর পর ক্যাম্পারের তোপে দিক হারালেও মিরাজ আশা বাঁচিয়ে রাখেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি তিনি। ৭ উইকেটে ১৮৩ রানে থামে বরিশালের ইনিংস।
বড় লক্ষ্য তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা মেলে বরিশালের। উদ্বোধনী জুটিতে ৫.৩ ওভারে ৫৫ রান যোগ করেন শেহজাদ ও তামিম। তামিম ধীর-স্থির থাকলেও ঝড় তোলেন শেহজাদ। পাকিস্তানি এই ওপেনার ১৭ বলে ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৯ রান করেন। নিয়মিত রানের দেখা পাওয়া বরিশাল অধিনায়ক তামিম আজও ৪০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। বাঁহাতি এই ওপেনার ৩০ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৩ রান করেন।
দলীয় ৯১ রানে তামিমকে ফেরানো চট্টগ্রামের আইরিশ পেসার ক্যাম্ফার বরিশালকে চেপে ধরেন। নিজের করা প্রথম দুই ওভারেই তুলে নেন ৪টি উইকেট, তার পরের তিন শিকার সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও ইয়ানিক কারিয়া। সৌম্য ১৭ রান করলেও মাহমুদউল্লাহ ৩ রান করেই থামেন। ম্যাচসেরা ক্যাম্ফারের ছোবলে ১০ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বরিশাল। এখান থেকে জুটি গড়ে তোলেন মিরাজ ও মুশফিকুর রহিম। ষষ্ঠ উইকেটে ২৯ বলে ৫১ রান যোগ করেন তারা।
বাউন্ডারি মারতে মুশফিককে সংগ্রাম করতে হলেও মিরাজ ছিলেন দুর্বার। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন তিনি। কিন্তু ১৮তম ওভারে থামতে হয় মিরাজকে, ১৬ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় ৩৫ রান করেন তিনি। ২২ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ২৩ রান করেন মুশফিক। ৩ ওভারে ২০ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন চট্টগ্রামের ক্যাম্ফার, টি-টোয়েন্টিতে এটাই তার সেরা বোলিং। সুপার ম্যান হয়ে ওঠা এই আইরিশ অলরাউন্ডার ৪টি ক্যাচও নেন। ক্যাচগুলোর একটি নিজের বলেই, বাকি তিনটি অন্য বোলারের বলে। বিলাল খান ২টি ও আল-আমিন হোসেন একটি উইকেট পান।
এর আগে ব্যাটিং করা চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে পুরো ইনিংসজুড়ে পথ দেখান আভিশকা। অন্য প্রান্তে উইকেট পড়তে থাকলেও আপন মনে ব্যাটিং করে যান লঙ্কান এই ওপেনার। বরিশালের বোলারদের জন্য দুঃস্বপ্ন হয়ে ওঠা আভিশকা ৫০ বলে ৫টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৯১ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন আভিশকা। ২৯ বলে ২টি চার ও একটি ছক্কায় ৩১ রান করেন শাহাদাত। ৯ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কায় হার না মানা ২৯ রান করেন ক্যাম্ফার। এ ছাড়া তানজিদ হাসান তামিম ১২ ও নাজিবুল্লাহ জাদরান ১৮ রান করেন। বরিশালের স্পিনার তাইজুল ইসলাম ২টি এবং কামরুল ইসলাম রাব্বি ও ইয়ানিক একটি করে উইকেট নেন।