কলা-কৌশল: ইকুয়েডর যুক্তরাষ্ট্র থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনায় ভারত থেকে কলা কিনছে রাশিয়া
ইকুয়েডরের সাথে মত বিরোধের পর থেকে ভারত থেকে কলা আমদানি শুরু করেছে রাশিয়া। মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দেশটির খাদ্য সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ সংস্থা এমনটা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রাশিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম বিনিময়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশটির প্রধান কলা সরবরাহকারী ইকুয়েডরের সঙ্গে মতবিরোধের পর এই পদক্ষেপ নেয়া হলো।
রাশিয়ান ভেটেরিনারি এবং ফাইটো স্যানিটারি পরিষেবা নজরদারি সংস্থা 'রোসেলখোজনাদজর' জানায়, ভারতীয় কলার প্রথম চালানটি জানুয়ারিতে রাশিয়ায় এসে পৌঁছেছে এবং ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে আরেকটি চালান আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাশিয়ায় ভারতীয় কলা রফতানির পরিমাণ আরও বাড়বে বলেও জানায় সংস্থাটি।
রোসেলখোজনাদজর জানিয়েছে, শুধু কলা নয়, রাশিয়ার বাজারে আম, আনারস, পেঁপে ও পেয়ারার মতো অন্যান্য ফল সরবরাহেও আগ্রহ দেখিয়েছে ভারত।
গত সপ্তাহে ইকুয়েডরের পাঁচটি কোম্পানি থেকে কলা আমদানি স্থগিত করে রোসেলখোজনাদজর। স্থগিতের কারণ হিসেবে জানায়, তারা ইকুয়েডরের কলায় কীটপতঙ্গ শনাক্ত করেছে।
তবে ইকুয়েডরের খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, রাশিয়ায় পাঠানো কলার মাত্র ০.৩ শতাংশে পোকামাকড় পাওয়া গেছে এবং তাতে কোনো ঝুঁকি নেই।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মতে, ২০২২ সালে ইউক্রেন আক্রমণের আগে রাশিয়া ইকুয়েডরের কলার বৃহত্তম আমদানিকারক ছিল। ইকুয়েডর তার বার্ষিক কলা রফতানির ২০-২৫ শতাংশ রাশিয়ায় সরবরাহ করত।
ইকুয়েডর ২০ কোটি ডলারের অত্যাধুনিক মার্কিন সরঞ্জামের বিনিময়ে রাশিয়ার তৈরি সামরিক সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্রকে হস্তান্তর করতে রাজি হয়েছে এমন একটি চুক্তির পর মস্কো এই স্থগিতাদেশ প্রদান করে। ইকুয়েডর, রাশিয়ান সামরিক সরঞ্জামগুলোকে 'ইউক্রেনীয় এবং রাশিয়ান স্ক্র্যাপ ধাতু' অর্থাৎ পুরোনো, অবাঞ্ছিত সরঞ্জাম হিসেবে উল্লেখ করেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইকুয়েডরের কাছ থেকে আসা অস্ত্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধক্ষেত্রে ইউক্রেনকে তার বাহিনীকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
২০২২ সালে ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের জের ধরে মস্কোর ওপর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার হয়েছে। এ যুদ্ধ রাশিয়াকে চীন, ভারত এবং অন্যান্য অ-পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে বাধ্য করেছিল।
যদিও রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ মার্কিন-ইকুয়েডর চুক্তির সাথে ভারতীয় কলা আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়ে স্পষ্ট কোনো যুক্তি দেয়নি। তবে মস্কোর সাথে বিরোধ রয়েছে এমন দেশগুলো থেকে খাদ্য আমদানি সীমাবদ্ধ করার ইতিহাস রয়েছে।
অনুবাদ: সাকাব নাহিয়ান শ্রাবন