'ক্ষতিকর মানুষদের চিনে গেছে': পাখির আক্রমণের মুখে পড়লেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট
নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় ইমু-সদৃশ এক পাখির কামড় খেলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জায়ের বলসোনারো।
ছোট আকৃতির উটপাখি বা ইমু সদৃশ এই পাখির নাম রীয়া।
স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম মেট্রোপলিস সাইট এর দেওয়া খবর অনুযায়ী, প্রেসিডেন্টের বাসভবনের খোলা চত্বরেই ঘুরে বেড়ায় পাখিগুলো। সোমবার বিকেলে প্রাসাদ চত্বরে পাখিদের খাওয়াতে যান প্রেসিডেন্ট বলসোনারো। এমন সময়েই তাকে ঠোকর মারে এক রীয়া পাখি।
এই ঘটনায় বলসোনারোকে ব্যঙ্গ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন অনেকেই। দেশটির এক সাংবাদিক সোলান মাতিউস ফেসবুকে পোস্ট করেন, 'এমনকি পাখিরাও এখন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর মানুষদের চিনে গেছে।'
জীববিজ্ঞানী ফ্লাভিও স্লৌজা টুইটে লেখেন, 'অবশেষে প্রকৃতি সেরে উঠছে'।
গত ৭ জুলাই করোনা সনাক্ত হবার পর থেকেই আইসোলেশনে আছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। বাড়িতে থেকে পশু-পাখির সঙ্গেই বেশি সময় কাটাচ্ছেন বলে জানা গেল।
গত বছর ১৫ আগস্ট ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে পৃথিবীর ফুসফুসখ্যাত আমাজন জঙ্গলে। ব্রাজিল সরকারের একটি গোপন নথি থেকে জানা যায়, আমাজন অঞ্চলকে বহুপক্ষীয় সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে যে প্রকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে, তা বাস্তবায়নের বিরোধী বলসোনারোর সরকার। গত জানুয়ারিতে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া বলসোনারো এই প্রকল্প রুখতে কৌশলগতভাবে আমাজন এলাকা 'দখল' করতে চান বলে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
আমাজনের এমন দুরবস্থার পেছনে বলসোনারোকে দোষারোপ করেছেন রক্ষণশীলেরাও। বলসোনারো কাঠুরে ও কৃষকদের জমি সাফ করতে উৎসাহিত করছেন বলে বারবার বনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
গ্রিনপিসের মার্সিয়ো আস্ট্রিনি বনাঞ্চল উজাড় ও দাবানলকে প্রেসিডেন্ট বলসোনারোর 'পরিবেশবিরোধী' নীতির ফলাফল বলে মন্তব্য করেছেন। সংগঠনটি অভিযোগ করেছে, বলসোনারোর সরকার স্থানীয় কৃষকদের আমাজনে আগুন দিতে উৎসাহ দিয়েছে।
পরিবেশের প্রতি প্রবল ডানপন্থী বলসোনারোর এমন নেতিবাচক অবস্থানের কারণেই রীয়া পাখির কামড় নিয়ে এমন ব্যঙ্গ করা হচ্ছে তাকে।
আর করোনা নিয়েও শুরু থেকেই অসতর্ক অবস্থানে ছিল বলসোনারোর সরকার। ব্রাজিল করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকলেও শুরু থেকেই এ ভাইরাসকে সাধারণ সর্দি-কাশি-জ্বরের মতো ফ্লু সংক্রমণ হিসেবে অভিহিত করে আসছিলেন তিনি। এ ভাইরাসকে তেমন একটা গা না করায় তা ঠেকাতে লকডাউন দেওয়ার বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছেন বলসোনারো।
এরপর অবশেষে গত ৭ জুলাই নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ব্রাজিলের এই প্রেসিডেন্ট।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান