শুধু ভিডিওতে দেখিয়েই সাড়ে ৬ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি হল দ্বীপ
আয়ারল্যান্ডের উপকূল থেকে দূরে তিনটি সৈকত, সাতটি বাড়ি আর প্রাকৃতিক বনভূমির ব্যক্তিমালিকানাধীন একটি দ্বীপ ৬.৩ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি দামে বিক্রি হল। আর অজ্ঞাতনামা ইউরোপীয় এক ক্রেতা স্বচক্ষে না দেখেই কিনে নিয়েছেন দ্বীপটি।
আয়ারল্যান্ডের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পশ্চিম দিকের ১৫৭ একরের এই দ্বীপটি হর্স আইল্যান্ড নামে পরিচিত। দ্বীপটি বিক্রির বেশিরভাগ কথাবার্তা সম্পন্ন হয় হোয়াটসঅ্যাপে। অজ্ঞাত এই ক্রেতা এক ভিডিও ট্যুারের মাধ্যমে দ্বীপটি পছন্দ করেন। করোনোর সময়ে তিনি শীর্ষ ধনকুবেরেদের এ ধরনের উদ্যোগের তালিকায় যুক্ত হওয়া একজন।
অসমতল, রুক্ষ মাটির এই দ্বীপটির মূল বাড়ি, অতিথি-কটেজগুলো আটলান্টিক মহাসাগরের দিকে মুখ করে বানানো।
১৯ শতকের দিকে দ্বীপটিতে এক সময় একটা তামার কারখানা ছিল, দ্বীপের এখানে সেখানে এখনও খনি রয়ে গেছে। ১৮৪১ সালে দ্বীপটির জনসংখ্যা ছিল ১৩৭ জন। কিন্ত ১৯৬০ সালের দিকে দ্বীপ ছেড়ে চলে যায় সব অধিবাসীরা, মন্টেগু রিয়েল এস্টেটের এক প্রতিনিধি এ তথ্য দিয়েছেন। এখন এ দ্বীপটিতে ফেরি আর নৌকা ভেড়ার জন্য একটা পিয়ার, একটা হেলিপ্যাড, টেনিস কোর্ট, জিম, গেমস হাউজ রয়েছে। স্বয়ংসম্পূর্ণ এই দ্বীপটির রয়েছে নিজস্ব বিদ্যুৎ, পানি ও পয়ঃনিস্কাষণ ব্যবস্থা আর দ্বীপের ভেতরেও রাস্তা রয়েছে আড়াআড়ি ভাবে । মূল বাড়ি ৪৫০০ বর্গফুটের মতো, এতে ছয়টা শোবারঘর আছে মোট। সামান্য, সুবিধাজনক অবস্থানেই আছে অতিথিদের জন্য কটেজগুলো।
'হর্স আইল্যান্ড একটি ব্যতিক্রমী দ্বীপ, এই কোভিড-১৯ এর সময়ে দ্বীপটি বিক্রি করা বড় একটা চ্যালেঞ্জ ছিল, স্বাভাবিকভাবেই দ্বীপটি বিক্রি করতে পেরে আমরা খুশি,' মন্টেগু রিয়েল স্টেটের প্রধান নির্বাহী টমাস বালাশেভ এ কথা জানান।
'রিয়েল এস্টেট এজেন্টরা ক্রমাগত ভার্চুয়ালি কেনাবেচায় যেতে বাধ্য হচ্ছে, করোনার কারণে দেখাশোনার কাজটি ভার্চুয়ালিই হচ্ছে, তবে এটার মতো বড় বিক্রির ঘটনা খুবই কম।'
'মহামারির কারণে এটাই এখন ট্রেন্ড হয়েছে, লোকালয় থেকে দূরে জায়গা কেনা ও ভাড়ার নেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে, তার একটি বড় উদাহরণ এই ঘটনাটি,' এই বিক্রির সঙ্গে জড়িত নাইট ফ্রাংক রিয়েল এস্টেটের কর্মকর্তা এলেক্স রবিনসন জানান।
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর থেকে অবকাশ যাপন ও ভ্রমণ প্রায় বন্ধই হয়ে গেছে, তবে ব্যক্তিমালিকানাধীন দ্বীপের চাহিদা বেড়েছে। ব্রোকার আর ভ্রমণ বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন মার্চের পর ইউরোপে ক্রেতা ও বাড়ি ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে লোকজন আগ্রহ দেখাতে শুরু করেছে। একেবারে নিজেদের করে দ্বীপ পাওয়ার কথা জানাচ্ছেন অনেকেই।