চ্যাম্পিয়ন্স লিগ: রুদ্ধশ্বাস দুই লড়াই উপহার দিল রিয়াল-সিটি, আর্সেনাল-বায়ার্ন
চ্যাম্পিয়ন্স লিগকে কেন ক্লাব ফুটবলের সবচেয়ে মর্যাদাকর প্রতিযোগিতা বলা হয়, সেটির প্রমাণ আরেকবার পাওয়া গেল। এক রাতে দুটি দুর্দান্ত ম্যাচ উপহার দিয়েছে টুর্নামেন্টটি, যদিও দুটি ম্যাচে খেলা চার দলের কেউই জিতেনি। কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের আজীবন মনে রাখার মতো এক রাত হিসেবে থেকে যাবে এটি।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার সিটির ম্যাচে গোল হয়েছে ছয়টি। অন্যদিকে এমিরেটস স্টেডিয়ামে আর্সেনাল ও বায়ার্ন মিউনিখের ম্যাচ দেখেছে চার গোল। অর্থাৎ, দুই ম্যাচ মিলে দশটি গোলের পরও এই চার দলের কেউই জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি!
জয় পাবেই বা কী করে! চার দলের সবাই যেন নেমেছিল একে অন্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায়। দিনশেষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ তো এজন্যই। বার্নাব্যুতে রিয়ালের সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন সিটি। ম্যাচের মাত্র দ্বিতীয় মিনিটেই বক্সের বেশ বাইরে থেকে আচমকা নেওয়া ফ্রি-কিকে রিয়াল গোলরক্ষক লুনিনকে বোকা বানিয়ে সিটিজেনদের এগিয়ে দেন বার্নার্দো সিলভা।
তবে রিয়াল বেশিক্ষণ দমে থাকেনি। ১২ মিনিটেই কামাভিঙ্গার দূরপাল্লার শট সিটি ডিফেন্ডার রুবেন দিয়াসের গায়ে লেগে জালে ঢুকে যায়। দুই মিনিট পরই প্রায় মাঝমাঠ থেকে দৌড়ে সিটি রক্ষণকে ভেঙে লস ব্লাঙ্কোসদের এগিয়ে দেন রদ্রিগো। প্রথমার্ধ শেষ হয় রিয়ালের ২-১ এ এগিয়ে থাকার মধ্য দিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৬ মিনিটে সম্ভবত ম্যাচের সেরা গোলটি করেছেন ফিল ফোডেন। বক্সের ঠিক বাইরে বল পেয়ে বাম পায়ের অসাধারণ শটে সিটিকে সমতায় ফেরান এই ইংলিশ মিডফিল্ডার।
৭১ মিনিটে আরেকটি দুর্দান্ত গোল আসে এই ম্যাচে। এবার সিটি ডিফেন্ডার জসকো গাভারদিওলের দূরপাল্লার শট জড়ায় রিয়ালের জালে। ম্যাচে আরেকবার এগিয়ে যায় সিটি। তবে এখানেই শেষ হয়নি নাটকীয়তার। ৭৯ মিনিটে রিয়ালকে সমতায় ফেরান ফেদে ভালভার্দে। এই উরুগুইয়ান মিডফিল্ডারের গোলটিও ছিল দেখার মতো। শেষ পর্যন্ত আর কোনো গোল না হলে ৩-৩ সমতাতেই ম্যাচ শেষ হয়। যদিও এতে লাভ সিটিরই হয়েছে বলা চলে। গত মৌসুমেও সেমি-ফাইনালে রিয়ালের মাঠে ১-১ সমতা নিয়ে নিজেদের মাঠে ৪-০ ব্যবধানে জিতেছিল গার্দিওলার দল। এবারও তেমন কিছুই করতে চাইবে তারা।
অন্যদিকে আরেক ম্যাচে এমিরেটস স্টেডিয়ামে প্রায় ১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে নেমেছিল আর্সেনাল। প্রতিপক্ষ বায়ার্ন মিউনিখের কাছে সর্বশেষ তিন দেখায় ১৫ গোল হজম করেছিল গানাররা। যদিও এই ম্যাচে কিছুটা এগিয়ে থেকেই নেমেছিল মিকেল আরতেতার দল। ম্যাচের ১২ মিনিটে বুকায়ো সাকার গোলে এগিয়েও যায় আর্সেনাল। ১৮ মিনিটে বায়ার্নকে সমতায় ফেরান সাবেক আর্সেনাল ফরোয়ার্ড সার্জ নাব্রি।
৩২ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নেন বায়ার্নের লেরয় সানে। সেখান থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন হ্যারি কেইন। ম্যাচে বায়ার্ন আরও এগিয়ে যেতে পারত, তবে সানের সহজ সুযোগ মিসে তা হয়নি। বরং ৭৬ মিনিটে ট্রসার্ডের গোলে সমতা ফেরায় আর্সেনাল। ম্যাচের শেষদিকে বায়ার্নের কোমানের শট বারে লেগে ফিরে আসে, আর একদম অন্তিম মুহূর্তে আর্সেনালের সাকা বায়ার্নের বক্সে নয়্যারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে পড়ে গেলেও পেনাল্টির আবেদন নাকচ করে দেন রেফারি।