সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে; কাজ চলবে আরও ২ দিন: বনবিভাগ
সুন্দরবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হলেও কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ফের আগুন লাগার সম্ভাবনা দূর করতে আরও অন্তত দুই দিন আগুন নেভানোর কাজ চলবে।
সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নুরুল করিম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড বাগেরহাট প্রতিনিধিকে বলেন, 'আগুন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে আগুন পুরোপুরি নিভে গেছে, এখনই তা বলা যাবে না। এলাকায় ধোঁয়া বা স্ফুলিঙ্গের কোনো চিহ্ন যেন না থাকে, তা নিশ্চিত করতে আমরা আরও অন্তত দুই দিন সতর্ক থেকে কাজ চালিয়ে যাব।'
নৌবাহিনীর তিনটি দল আজ (৬ মে) সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জেউধারা স্টেশনের আমুরবুনিয়া টহল চৌকির কাছে এলাকায় ছড়িয়ে পড়া আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এসএম তারেক সুলতান জানান, আজ সকালে বন বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস কর্মী, স্থানীয় বাসিন্দা, নৌবাহিনীর দল ও স্বেচ্ছাসেবকরা আগুন নেভাতে একসঙ্গে কাজ শুরু করেন।
ইউএনও তারেক সুলতান বলেন, 'সোমবার (৬ মে) সকালে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের পরিচালক (অপারেশনস) লেফট্যানেন্ট কর্নেল তাজুল ইসলামের নেতৃত্বে তাদের পাঁচটি টিম আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেছে। এছাড়া বন বিভাগের সঙ্গে নৌবাহিনীর ৩টি টিমসহ শতাধিক স্বেচ্ছাসেবকও আগুন নেভানোর কাজে যোগ দিয়েছেন।'
আগুন এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় আছে উল্লেখ করে ইউএনও আশা প্রকাশ করেন, আজ পুরোপুরি আগুন নেভানো যাবে।
এর আগে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় বনাঞ্চলের ঝুঁকি বিবেচনায় অগ্নিনির্বাপণ কাজ স্থগিত করা হয়।
শনিবারে লাগা আগুনে পুড়ে যাওয়া বনাঞ্চলের বেশ কিছু গাছপালা, লতাগুল্ম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ওই এলাকায় মূলত বলা, সুন্দরী, বাইন, গেওয়া, জিন, সিংড়াসহ বিভিন্ন ধরনের লতাগুল্ম-জাতীয় গাছ রয়েছে।
পুড়ে যাওয়া নিচের ভূমিতে এখন ছাইয়ের স্তর। তার ওপর দিয়ে তাপ উঠছে। সেখানে ধোঁয়ায় আর তাপে শ্বাস নেয়া কষ্টকর হয়ে উঠেছে। প্রচণ্ড তাপ ও পুড়ে যাওয়া নিচের স্তরের কারণে এখন গাছের সবুজ পাতাও শুকিয়ে গেছে। নতুন করে ছাইয়ের ওপর পড়ছে এই শুকনো পাতা।
এর আগে সুন্দরবনে অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিস, বন বিভাগের পাশাপশি অন্য সংস্থাকে তেমন তৎপর থাকতে দেখা যায়নি। তবে এবার উপজেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাহিনী ও অন্যান্য সংস্থাকে শুরু থেকেই বেশ তৎপর ও উদ্যমী দেখা গেছে।
অগ্নিকাণ্ডের পরপরই বনবিভাগের পাশাপাশি ঘটনাস্থলে আসে উপজেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিরা।
রোববার (৫ মে) সকালে আগুন নেভাতে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের পাশাপাশি যোগ দেয় নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড। দুপুরে যোগ দেয় বিমান বাহিনী।