ভারত যেভাবে নিজেদের এক অস্বাভাবিক টাইম জোনে আটকে আছে
পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম দেশ ভারত। দেশটির পূর্ব থেকে পশ্চিমের দূরত্ব প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার। এত বড় হওয়ার পরেও পুরো ভারতের টাইম জোন বা প্রমাণ সময় একটাই। একে ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড টাইম বা আইএসটি বলা হয়।
এজন্য দেশটির পশ্চিমের গুজরাটে সাড়ে ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে, আর পূর্বের অরুণাচল প্রদেশে সাড়ে ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে সূর্য ওঠে।
ভাবুন তো, আপনার শহরে রোজ ভোর সাড়ে ৪টায় সকাল হলে কেমন হবে আপনার জীবনযাত্রা?
ভারতের সময় কো-অরডিনেটেড ইউনিভার্সাল টাইম (ইউটিসি)+৫:৩০ অফসেট। ইউটিসিকেই আগে গ্রিনউইচ মিন টাইম বা জিএমটি বলা হতো।
আমাদের পৃথিবীর ৩৬০ ডিগ্রিকে ১৫ ডিগ্রি করে ২৪ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। পৃথিবী নিজ অক্ষে ঘোরার কারণে এই ২৪ ভাগে এক ঘণ্টা করে ব্যবধান তৈরি হয়। এভাবেই পুরো পৃথিবীতে ২৪ ঘণ্টায় একদিন হিসাব করা হয়।
পৃথিবীর সব দেশের সময় লন্ডন থেকে দূরত্ব হিসাবে করা হয়। তাই লন্ডনের ইউটিসি হলো শূন্য।
লন্ডনের পূর্বদিকে যেসব দেশ আছে সেগুলো ইউটিসি প্লাস অফসেট হয়, আর পশ্চিমের দেশগুলোর সময় ইউটিসি মাইনাস অফসেট হয়। ভারত ইউটিসি+৫ এবং ইউটিসি +৬ এর মাঝখানে অবস্থিত। ইউটিসি+৫:৩০-কে ভারতের আইএসটি নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মানে লন্ডনের চেয়ে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা আগে ভারতে সূর্যোদয় হয়।
এছাড়া, ভারতের সময় নিউইয়র্ক থেকে ৯ ঘণ্টা ৩০ মিনিট এবং টোকিওর চেয়ে তিন ঘণ্টা ৩০ মিনিট পিছিয়ে।
একসময় ভারতে একাধিক আঞ্চলিক প্রমাণ সময় চালু ছিল। নির্দিষ্ট প্রমাণ সময় না থাকায় ব্রিটিশদের প্রশাসনিক কাজে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছিল। তাই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৯২ সালে মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাই নামে পরিচিত) এশিয়ার প্রথম মানমন্দিরগুলির মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠা করে।
১৮০২ সালে মাদ্রাজ মানমন্দিরের প্রথম আনুষ্ঠানিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ব্রিটিশ অ্যাস্ট্রোনমার জন গোল্ডিংহাম মাদ্রাজ সময়কে 'ভারতীয় প্রমাণ সময়ের ভিত্তি' হিসেবে ঘোষণা করেন। এটি ছিল গ্রিনউইচ মান সময়ের থেকে ৫ ঘণ্টা ২১ মিনিট ১৪ সেকেন্ড এগিয়ে। যা বর্তমান ভারতীয় প্রমাণ সময়ের থেকে ৯ মিনিট পিছিয়ে ছিল।
মাদ্রাজের অবস্থান ছিল ভারতের দুই প্রান্তের অনেকটা মাঝামাঝি। তাই নতুন করে দুটি শহরের সময়কে বেছে নেওয়া হয় ভারতীয় সময়ের প্রমাণ হিসাবে।
যেহেতু তৎকালীন ব্রিটিশ শাসনামলের রাজধানী ছিল কলকাতা, আর বাণিজ্য নগরী হিসেবে সেইসময়ও আজকের মতোই গুরুত্বপূর্ণ ছিল মুম্বাই। তাই কলকাতা ও মুম্বাইয়ের সময়কে স্ট্যান্ডার্ড টাইম হিসেবে ধরা হয়। এই দুই শহরের সময়ের মধ্যে পার্থক্য ছিল ৩৮ মিনিট ৫০ সেকেন্ড।
সেসময় মধ্যবর্তী সময় অঞ্চল হিসেবে মাদ্রাজ প্রমাণ সময় মেনেই ভারতীয় রেল যোগাযোগের সময়সূচি নির্ধারণ করা হতো।
তবে রেল ব্যবস্থার প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে সময়ের সমন্বয়-সাধনই হয়ে উঠল মাথাব্যথার কারণ। দুই ধরনের সময়ের কারণে গণ্ডগোল হতে থাকল আন্তর্জাতিক রেল পরিষেবা এবং টেলিগ্রাফে। সেই সঙ্গে সময় বিভ্রাটে দুর্ঘটনাও বাড়তে থাকে।
অন্যদিকে, বিভিন্ন দেশের ও অঞ্চলের সময়ের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা, ট্রান্সকন্টিনেন্টাল রেল ভ্রমণকে আরও ভালোভাবে সমন্বয় করা এবং সামুদ্রিক যোগাযোগের উন্নয়নের জন্য ১৮৮৪ সালে ওয়াশিংটন ডিসিতে একটি সম্মেলনে প্রথম আন্তর্জাতিক প্রমাণ সময় বা টাইম জোন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়। জন্ম নেয় গ্রিনউইচ গড় সময়। সারা পৃথিবীকে ভেঙে নেওয়া হয় ৩৬০টি দ্রাঘিমাংশে। যেখানে প্রতি দ্রাঘিমার মাঝে সময়ের ব্যবধান ৪ মিনিট।
ব্রিটেনের গ্রিনউইচ শহরের দ্রাঘিমাকে শূন্য ডিগ্রি ধরে অন্যান্য অঞ্চলের সময় নির্ধারণ করার পদ্ধতি শুরু হয়। দেখা হত আঞ্চলিক সময় গ্রিনউইচের থেকে কতটা এগিয়ে বা পিছিয়ে রয়েছে। এই নতুন নিয়ম অনুযায়ী সাড়ে ৭ ডিগ্রি দ্রাঘিমার ব্যবধানে তৈরি হয় ৩০ মিনিটের সময়ের ব্যবধান।
আর ভারতের (অখণ্ড ভারত) দুই প্রান্তের মধ্যে এর ব্যবধান প্রায় ৩৯ ডিগ্রি। সেজন্যই প্রয়োজন পড়ে ভারতীয় সময়কে বেশ কয়েকটি প্রমাণ সময়ে ভেঙে নেওয়ার।
বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বৈজ্ঞানিকেরা ভারতের সময়কে জিএমটির সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য কিছুটা চাপ দিয়েছিলেন। লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি ভারতের জন্য দুটি সময় টাইম জোনের প্রস্তাব দিয়েছিল। তারা দেশের দুই প্রান্তের জিএমটির ব্যবধান পুরো এক ঘণ্টা রাখার সুপারিশ করেছিল। সে হিসাবে পূর্বাঞ্চল জিএমটি+৬ এবং পশ্চিমাঞ্চল হবে জিএমটি +৫।
ঔপনিবেশিক সরকার এই সুপারিশ প্রত্যাখ্যান করে। তারা মাঝামাঝি সময় সমন্বয় করে জিএমটি+৫:৩০ মেনে চলার সিদ্ধান্তে অটল থাকে।
১৯০৫ সালে ভারতের ব্রিটিশ সরকার স্ট্যান্ডাডাইজড টাইম জোনের নীতিগ্রহণ করে। ১৯০৬ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে অভিন্ন আইএসটি চালু হয়। উত্তরপ্রদেশে এলাহাবাদের কাছেই অবস্থিত মির্জাপুরের একটি 'ক্লক টাওয়ার' অনুসারে প্রমাণ সময় নির্ধারিত হয়। হিসাবের সুবিধার জন্যে এটিকে গ্রিনউইচ মান সময়ের সঙ্গে ঠিক সাড়ে পাঁচ ঘন্টা আগে রাখা হয় (ইউটিসি + ৫:৩০)। মাদ্রাজ থেকে মানমন্দির চলে আসে মির্জাপুরে।
স্বাধীনতার পর প্রায় তিন বছর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানসহ (বর্তমান বাংলাদেশ) সমগ্র পাকিস্তানেই ভারতীয় প্রমাণ সময় মানা হতো। ১৯৫১ সালের পর পাকিস্তান এবং আরও পরে বাংলাদেশ ভিন্ন প্রমাণ সময় মেনে চলা শুরু করে। তবে সেই থেকে এখনও পর্যন্ত ভারত ও শ্রীলঙ্কার সর্বত্র এই প্রমাণ সময় মেনে চলা হয়। তাই বলা হয় ভারতে এখনও ঔপনিবেশিক টাইম জোন বিদ্যমান।
ভারতে দিবালোক সংরক্ষণ সময় (ডিএসটি) বা কোনো ঋতু অনুসারে সময় সমন্বয় করা হয় না। যদিও অসামরিক ক্ষেত্রে জ্বালানি খরচ কমানোর জন্যে ভারতে ১৯৬২, ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালে সংক্ষিপ্তভাবে ডে লাইট সেভিং বা দিবালোক সংরক্ষণ সময় চালু হয়।
সময় নিয়ে রাজনীতি
কিছু দেশ সম্প্রতি তাদের নিজস্ব টাইম জোন পরিবর্তন করেছে।
ভেনিজুয়েলার সাবেক প্রেসিডেন্ট হুগো শ্যাভেজ ২০০৭ সালে স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিবালোকে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ দিতে ঘড়ির কাঁটা আধা ঘণ্টা পিছিয়ে দিয়েছিলেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো পরে এ নিয়ম বদলান।
২০১৫ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সময় পৃথক করতে 'পিয়ংইয়ং টাইম' প্রচলন করে উত্তর কোরিয়া। এর ফলে দেশটি জিএমটি+৯ এর পরিবর্তে জিএমটি+৮:৩০ ঘণ্টা এগিয়ে আছে।
একটি প্রমাণ সময় থাকার প্রভাব
আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক ইন্টারন্যাশনাল ল-এর জ্যেষ্ঠ গবেষক জিওফ গর্ডন বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে ঔপনিবেশিক আমলের অভিন্ন টাইম জোনের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি করছে ভারতের রাজনৈতিক, বৈজ্ঞানিক ও বাণিজ্যিক মহল। সরকারের ভেতরে ও বাইরে এ নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে।'
তিনি এই সময়ের ভারতকে টেরি গিলিয়াম পরিচালিত ১৯৮৫ সালের ডার্ক ডিস্টোপিয়ান সাই-ফাই ফ্যান্টাসি চলচ্চিত্র 'ব্রাজিল' বা মার্কিন কার্টুনিস্ট রুব গোল্ডবার্গের আঁকা হাস্যরসাত্মক জটিল কনট্রাকশনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের মানুষের দাবি, সঠিকভাবে সময় ব্যবস্থাপনার জন্য দুটো টাইম জোন জরুরি। কারণ ভারতের বর্তমান টাইম জোন দেশটির উত্তরপূর্ব অংশের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত।
ভারতের পূর্বপ্রান্তে আসামের ডিব্রুগড়ে বা নাগাল্যান্ডের কোহিমায় যখন সূর্যোদয় হয়, পশ্চিমের পোরবন্দরে তখন মাঝরাত, এর প্রায় দুঘন্টা পরে এখানে সূর্য ওঠে। অথচ এই দুই প্রান্তেরই স্থানীয় সময় এক। ফলে আসাম বা উত্তরপূর্ব ভারতে মানুষ সকাল ১০টায় অফিস-আদালত শুরু করেন, আর অফিস শেষ হওয়ার আগেই অন্ধকার ঘনিয়ে যায়।
তাদের দাবি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের টাইম জোন বাকি ভারতের টাইম জোন থেকে দুই ঘণ্টা এগিয়ে দেওয়া হোক।
ভারতের পূর্বদিকের দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভূটানের টাইম জোন আলাদা। এই দুই দেশেরই সময় ভারতের চেয়ে আধ-ঘণ্টা এগিয়ে। অর্থাৎ,ভৌগোলিকভাবে আরও বেশি পূর্বে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও, আসাম ও অরুণাচলের সময় বাংলাদেশ ও ভূটানের চেয়ে আধ-ঘণ্টা পিছিয়ে!
আবার, উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর ঠিক নিচে অবস্থিত মিয়ানমারের সময় ভারতের চেয়ে এক-ঘণ্টা এগিয়ে!
পৃথক টাইম জোন চাওয়াদের দাবি, টাইম জোন আলাদা করা হলে কাজের সময় অতিরিক্ত দুই ঘণ্টা সূর্যালোক পাবে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো। এখন প্রতিদিন এই দুই ঘণ্টা দৈনন্দিন কর্মতালিকা থেকে বাদ যায়।
আবার দুই ঘণ্টা সময় এগিয়ে আসায় সূর্যাস্তের পরে আর অফিসগুলোতে কাজ করতে হবে না। এখন আইএসটি মেনে অফিসের কাজ হওয়ায় বিকাল ৪টার পরেই আলো জ্বালিয়ে দিতে হয় অফিসে। ফলে অতিরিক্ত দুই ঘণ্টা বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়। এছাড়া, দিনের আলোর সঠিক ব্যবহার না হওয়ায় মানুষ স্ট্রেসে ভুগছে এবং তাদের বায়োলজিক্যাল ক্লক বিঘ্নিত হচ্ছে।
এর সপক্ষে তারা আরও বলেছেন, পূর্ব পশ্চিমে চওড়া প্রায় সব দেশেই, যেমন আমেরিকায় প্রায় পাঁচ-ছটি এবং রাশিয়ায় আছে এগারোটি টাইম জোন। সেখানে ভারত একমাত্র বিরাট ব্যতিক্রম। কারণ উত্তরপ্রদেশের একটি ছোট শহরের স্থানীয় সময়ই সারা দেশের একমাত্র সময় হিসেবে গণ্য করা হয়।
আসামের চা-বাগানগুলোতে অবশ্য বেসরকারিভাবে আগে থেকেই নিজস্ব সময়সূচি চালু আছে, যাকে সাধারণভাবে চা-বাগান টাইম বলে ডাকা হয়।
অন্যদিকে, অভিন্ন টাইম জোন চালু রাখার পক্ষের মানুষের দাবি, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে আলাদা সময় চালু হলে তা ওই এলাকাকে বাকি দেশ থেকে আরও বিচ্ছিন্ন করে দেবে। ট্রেন-বিমান চলাচলে সমস্যা হবে এমন আশঙ্কা আছে অনেকের।
অনেকে আবার মনে করেন, দুটি পৃথক টাইম জোনের ঝামেলায় না গিয়ে আইএসটি আধ ঘণ্টা এগিয়ে আনলেই সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।
তবে শুধু ভারতই নয়, বিপুল ভৌগোলিক আয়তন সত্ত্বেও প্রতিবেশী চীনেরও একটি মাত্র প্রমাণ সময় আছে। অথচ চীন বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ।
২০১৪ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, একটি মাত্র প্রমাণ সময় নির্ধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণের প্রতীকী।
ভারতের সরকারি টাইমকিপার ন্যাশনাল ফিজিক্যাল ল্যাবরেটরি (এনপিএল) দুটি পৃথক টাইম জোনের আহ্বান জানিয়েছে।
তারা তাদের প্রতিবেদনে একটি প্রমাণ সময় থাকায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের জীবনে 'নেতিবাচক প্রভাব'-পড়ার কথা উল্লেখ করেছে।
তারা দেশের 'একেবারে উত্তর-পূর্ব অঞ্চলগুলোতে', অর্থাৎ, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশে দুটি প্রমাণ সময় নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে। একটি জিএমটি+৫:৩০, অন্যটি জিএমটি +৬:৩০।
টাফটস বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক মৌলিক জগনানি বলেন, 'ভারতের উত্তর-পূর্বে গুজরাটের তুলনায় প্রায় দুই ঘণ্টা আগে সূর্য ওঠে ও অস্ত যায়। অথচ এই দুই অংশেই একই প্রমাণ সময় অনুসরণ করা হয়।'
তিনি ২০১৯ সালে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন। সেখানে তিনি ভারতে প্রাকৃতিক সার্কেডিয়ান ছন্দ বা চক্রের ওপর, বিশেষত শিশুদের উপর সূর্যালোকের প্রভাব ও গুরুত্ব তুলে ধরেছিলেন।
জগনানি আরও বলেন, 'এর ফলে শিশুদের ঘুমের ধরন প্রভাবিত হয়... দেরিতে সূর্যাস্ত হওয়া অঞ্চলের শিশুরা দেরিতে ঘুমাতে যায়। অন্যদিকে, স্কুল এবং কাজ শুরুর নির্দিষ্ট সময় থাকায় ঘুম পরিপূর্ণ না হতেই তারা ফের সকালে উঠে পড়ে। এতে ঘুমের পরিমাণ কমে যায় এবং শিক্ষা ও ব্যক্তিজীবনে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।'
এনপিএল-ও এই সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেছে, মানুষের স্বাস্থ্য ও কর্মদক্ষতার উপর সার্কেডিয়ান ছন্দের প্রভাব এবং এই অঞ্চলের 'সামগ্রিক সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়ন' পারস্পরিক সম্পর্কিত।
তবে, ভারতের অস্বাভাবিক এই প্রমাণ সময় এখনই পরিবর্তিত হবে বলে মনে হয়না।
২০১৯ সালে ভারতের সংসদে দুটি প্রমাণ সময় প্রবর্তনের দাবি তোলা হয়। তবে একটি সরকারি কমিটি বিভিন্ন 'কৌশলগত কারণে'র কথা উল্লেখ করে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভাবানুবাদ: তাবাসসুম সুইটি