১০ মাস বেতন পান না কোহলি-রোহিতরা
সালটা ২০১৮। এ বছর ৬ হাজার ১৩৮ কোটি রুপিতে স্টার টিভির সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি করে বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)। এটা কেবল একটি খাতের আয়। বিশ্বের শীর্ষ ধনী বোর্ডের আরও বেশ কয়েকটি আয়ের উৎস আছে। কিন্তু তারাই শীর্ষ কয়েকজন খেলোয়াড়কে বেতন দিচ্ছেন গত ১০ মাস ধরে।
বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, জাসপ্রিত বুমরাহসহ বিসিসিআইয়ের চুক্তিভুক্ত শীর্ষ ক্রিকেটাররা ১০ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না। গত অক্টোবর থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছে না এসব ক্রিকেটারকে। চুক্তির চার ভাগের এক ভাগ পারিশ্রমিক গত অক্টোবরের মধ্যেই দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চুক্তিভুক্ত ২৭জন ক্রিকেটারকে এখনও পারিশ্রমিক দেওয়া হয়নি।
কেবল বেতনই নয়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে খেলা দুটি টেস্ট, ৯টি ওয়ানডে ও ৮টি টি-টোয়েন্টিরি ম্যাচ ফিও ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দেয়নি বিসিসিআই। সব মিলিয়ে বিসিসিআইয়ের কাছে ক্রিকেটারদের পাওনা ৯৯ কোটি রুপি।
'এ' প্লাস ক্যাটাগরিতে থাকা বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, জাজপ্রিত বুমরাহরা বছরে ৭ কোটি রুপি করে পান। 'এ' 'বি' এবং 'সি' ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটাররা বাৎসরিক বেতন হিসেবে যথাক্রমে ৫, ৩ ও ১ কোটি রুপি করে পান। টেস্ট, ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টির ম্যাচ ফি যথাক্রমে ১৫, ৬ এবং ৩ লাখ। কিন্তু এসব পারিশ্রমিক ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি।
২০১৮ সালের মার্চে বিসিসিআইয়ের প্রকাশ করা ব্যালান্স শিটে দেখা যায় ৫ হাজার ৫২৬ কোটি রুপি ব্যাংকে জমা আছে। এ ছাড়া স্থায়ী আমানত বা ফিক্সড ডিপোজিট হিসেবে জমা রাখা আছে ২ হাজার ৯৯২ কোটি রুপি। এরপর ২০১৮ সালে ৬ হাজার ১৩৮ কোটি রুপিতে স্টার টিভির সঙ্গে ৫ বছরের চুক্তি হয় বিসিসিআইয়ের।
এই হিসেবে কোহলি-রোহিতদের বেতন না পাওয়ার কোনো কারণ নেই। কিন্তু শীর্ষ ৮জন ক্রিকেটার তাদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে নিশ্চিত করেছেন। এ বিষয়ে জানতে বিসিসিআইয়ের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ম্যাসেজ বা ফোন কলের উত্তর দেননি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
গত ডিসেম্বর থেকে বিসিসিআিইয়ের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তার পদটি ফাঁকা পড়ে আছে। এ ছাড়া গত জুলাই থেকে প্রধান নির্বাহী ও ক্রিকেট অপারেশন্সের মহাব্যবস্থাপকও নেই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিসিআইয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, 'আগের কর্মীদের চুক্তি বিসিসিআইয়ের বর্তমান কমিটি দ্বারা নবায়ন না হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশাসনিক পদগুলো এখনও ফাঁকা আছে।'
ভারতের সিনিয়র একজন ক্রিকেটার জানিয়েছেন, বোর্ড সাধারণত খেলোয়াড়দের প্রতি তিন মাস অন্তর চুক্তির বকেয়ার জন্য চালান সংগ্রহ করতে বলে। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে সেটা হচ্ছে না। তিনি বলেন, 'নতুন চুক্তির পর তারা এমন কোনো ঘোষণা দেয়নি। চার কিস্তিতে আমাদের পারিশ্রমিক দিয়ে থাকে বিসিসিআই। কিন্তু এবার কখন পাবো, আমরা তা জানি না। গত মাসে নিউজিল্যান্ড সফরের পারিশ্রমিক নিয়ে কথা শুনেছি। কিন্তু এখনও তা বুঝে পাইনি।'