‘সবারই লক্ষ্য থাকে সর্বশেষ বিশ্বকাপ থেকে ভালো করার’
জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর থেকেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা। শক্তিতে বেশ পিছিয়ে থাকার দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠেও গড়পড়তা মানের ক্রিকেট খেলে তারা। ৪-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতলেও ব্যাটিং-বোলিং নিয়ে ছিল অস্বস্তি। জয় পাওয়া চার ম্যাচের প্রথমটি ছাড়া প্রতি ম্যাচেই ঘাম ঝরিয়ে জিততে হয় স্বাগতিক দলটিকে। এমন পারফরম্যান্সের কারণে বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নিয়ে কেউ-ই সেভাবে আশা দেখেনি।
যতোটুকু আশা ছিল, সেটাও মিলিয়ে গেছে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পর। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিন ম্যাচের প্রস্তুতিমূলক সিরিজে পরীক্ষা-নিরীক্ষা তো দূরের কথা, জেতার জন্য প্রাণপণে লড়েও পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তর দল। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে সিরিজ খোয়ায় তারা। এরপর ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নাজেহাল অবস্থা হয় বাংলাদেশের। সব মিলিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে চলমান বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ভালোর করার সম্ভাবনার আগে বড় প্রশ্নবোধক চিহ্ন।
ক্রিকেটাররা অবশ্য ভালো করতে প্রত্যয়ী। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ৬০ রানে হারের পর শান্ত জানান, বিশ্বকাপে বিশেষ কিছু করার আশায় তিনি। এর আগে তাওহিদ হৃদয় সেমি-ফাইনাল খেলার কথা জানান। স্বপ্নের সীমানা আরও বাড়িয়ে ফাইনাল খেলার কথা বলেন সৌম্য সরকার। শরিফুল ইসলামের কণ্ঠেও ভালো করার প্রত্যয়। তবে নির্দিষ্ট কোনো ধাপের কথা বলছেন না তরুণ বাঁহাতি এই পেসার, সর্বশেষ বিশ্বকাপ থেকে ভালো করাই লক্ষ্য তার। একটি করে ম্যাচ জিতে সামনে এগোতে চান শরিফুল।
২০২২ বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচের দুটিতে জেতে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসকে হারানো সাকিব আল হাসানের দল পরে জিম্বাবুয়েকে হারায়। ভারতের বিপক্ষে সম্ভাবনা জাগিয়েও ৫ রানে হারে তারা। গতবারের চেয়ে ভালো করার কথা জানিয়ে শরিফুল বলেন, 'প্রতিটা বিশ্বকাপে সবারই লক্ষ্য থাকে সর্বশেষ বিশ্বকাপ থেকে ভালো করার। সেই ক্ষেত্রে আমার ইচ্ছা আছে, আমার দলেরও ইচ্ছা আছে ম্যাচ বাই ম্যাচ জেতার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।'
আগামী ৮ জুন বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এই ম্যাচে অবশ্য শরিফুলের না খেলার সম্ভাবনাই বেশি। ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজের বলেই ফিল্ডিং করতে গিয়ে বাঁ হাতে চোট পান তিনি, দেওয়া হয়েছে ছয়টি সেলাই। সেলাই কাটার পরে জানা যাবে, তিনি কবে মাঠে ফিরতে পারেন। 'গ্রিন-রেড স্টোরি' নামে বিসিবির সিরিজ সাক্ষাৎকারের আজকের পর্বে শরিফুল তার ইনজুরির বিষয়ে কিছু বলেননি। মঙ্গলবার পোস্ট করা বিসিবির ভিডিওতে জাতীয় দল ও বিশ্বকাপে খেলার অনভূতি, সতীর্থদের সঙ্গে সম্পর্ক, বিশ্বকাপের লক্ষ্য নিয়ে কথা বলেন তিনি।
জাতীয় দল ও বিশ্বকাপে খেলা নিয়ে শরিফুল বলেন, 'আমি মনে করে এটা অনেক বড় পাওয়া। কারণ ক্রিকেটকে ভালোবাসা প্রতিটা মানুষ, যারা গ্রামে-গঞ্জে যেখানেই খেলে না কেন, সবারই স্বপ্ন থাকে জাতীয় দলে খেলবে। আমি জাতীয় দলের একজন সদস্য হয়ে.. কী বলবো, মুখে বলে বোঝানোর মতো নয়। প্রতিটা খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে বিশ্বকাপ খেলা। সেটা ক্রিকেট, ফুটবল বা যেকোনো খেলাই হোক। তো আমি যদি বিশ্বকাপে অংশ নিই, এটা অন্যরকম পাওয়া।'
যুব দলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতার পরের বছর (২০২১ সাল) থেকে জাতীয় দলের হয়ে খেলছেন শরিফুল। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমানরা থাকার পরও তিনি হয়ে উঠেছেন দলের অন্যতম পেসার। এই দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে খেলাটাও তার কাছে স্বপ্ন পূরণের মতো, 'বিপিএলে তাসকিন ভাইয়ের সঙ্গে খেলেছি, ডিপিএলে খেলেছি, জাতীয় দলে খেলেছি, মুস্তাফিজ ভাইয়ের সঙ্গে খেলা হয়। যখন অনেক ছোট ছিলাম, ভাবতাম কবে উনাদের সঙ্গে খেলব। আর এখন উনাদের সঙ্গে খেলছি, এটা কিছু স্বপ্নের মধ্যে একটি পূরণ হওয়ার মতো।'