মানুষের জন্য তাত্ত্বিকভাবে বাসযোগ্য প্রায় পৃথিবীর সমান নতুন গ্রহ আবিষ্কার নাসার!
পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। এক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত দূষিত হতে থাকা গ্রহটিকে বসবাসযোগ্য রাখতে নেওয়া হচ্ছে নানা পদক্ষেপ।
এরই মাঝে পৃথিবীর বাইরেও মানুষের থাকার জন্য জায়গা খুঁজে পেয়েছে নাসা। ধারণা করা হচ্ছে, চাঁদের মতো এই জায়গার পিছনে ততোটা পরিশ্রমও করতে হবে না।
কেননা আগেভাগেই জায়গাটি মানুষের জন্য তাত্ত্বিকভাবে 'উপযুক্ত'। নাসার টেলিস্কোপে ঠিক যেন এমনটাই উঠে এসেছে। সেক্ষেত্রে পৃথিবীর মতো বায়ুমণ্ডলসহ একটি এক্সোপ্ল্যানেট খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
জানা গিয়েছে, এই এক্সোপ্ল্যানেটটি পৃথিবীর চেয়ে সামান্য চওড়া। এর তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই এক্সোপ্ল্যানেটটি মাত্র কয়েক দিনেই তার নক্ষত্রের চারপাশে ঘুরে ফেলে।
জনবসতি গড়ে তোলার জন্য এক্সোপ্ল্যানেট নিয়ে আশা প্রকাশ করেছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, এই গ্রহে প্রাণের সম্ভাবনা থাকতে পারে। এই নতুন সম্ভাব্য গ্রহটি 'গ্লিস ১২বি' নামে পরিচিত, যা বিজ্ঞানীদের ভাষায় এক্সোপ্ল্যানেট।
গ্লিস ১২বি পৃথিবী থেকে প্রায় ৪০ আলোকবর্ষ দূরে মীন রাশিতে অবস্থিত একটি ছোট এবং শীতল লাল বামন নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে। এতে এক বছর মানে পৃথিবীর ১২.৮ দিন।
গ্লিস ১২বি এক্সোপ্ল্যানেটটি নাসার ট্রান্সিটিং এক্সপ্লোনেট সার্ভে স্যাটেলাইট আবিষ্কার করেছে। এই এক্সোপ্ল্যানেটের প্রস্থ পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১.১ গুণ বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই প্রস্থ এক্সোপ্ল্যানেটটিকে আমাদের গ্রহের পাশাপাশি শুক্রের মতো করে তোলে, যাকে পৃথিবীর যমজ বোন বলা হয়।
গ্লিস ১২বি তার নক্ষত্রকে মাত্র ১২.৮ দিনেই প্ৰদক্ষিণ করে ফেলে। যেহেতু এই লাল বামন গ্লিস ১২ সূর্যের আকারের প্রায় এক চতুর্থাংশ, তাই এটি পৃথিবীর নক্ষত্রের চেয়েও অনেক বেশি শীতল।
অর্থাৎ, যদিও গ্লিস ১২বি তার লাল বামন নক্ষত্র থেকে সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যে দূরত্বের মাত্র ৭ শতাংশ সমান দূরত্বে রয়েছে, এটি এখনও বাসযোগ্য অঞ্চল। এই এলাকাটি 'গোল্ডিলক্স জোন' নামেও পরিচিত।
গ্লিস ১২বি সূর্য থেকে শুক্রের প্রাপ্ত বিকিরণের প্রায় ৮৫ শতাংশ গ্রহণ করে। কিন্তু শুক্রের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৮৬৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪৬৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এর তুলনায় এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ১০৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস) বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও পৃথিবী ও শুক্র উভয়ই সূর্যের বাসযোগ্য অঞ্চলে রয়েছে। এদের মধ্যে প্রথমটিতে জীবন সম্ভব ও একটি অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। আর অন্যটি একটি অবাসযোগ্য নরক যেখানে তাপমাত্রা এত গরম যে সীসাও গলে যেতে পারে।
অবশ্য গ্লিস ১২বি আবিষ্কারের পিছনে থাকা বিজ্ঞানীদের দল এখনও নিশ্চিতভাবে বলতে পারেননি যে এই এক্সোপ্ল্যানেটে সত্যিই বায়ুমণ্ডল আছে কি-না। তাই পৃথিবীর মতো এটিও বাসযোগ্য হতে পারে কি-না তা স্পষ্ট নয়, তবে গবেষকরা কিন্তু আশাবাদী।