ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেনি ভারত, ব্রাজিল, সৌদি আরবসহ বেশ কিছু দেশ
সুইজারল্যান্ডে অনুষ্ঠিত ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনের যৌথ ঘোষণাপত্রে ভারত, ব্রাজিল, সৌদি আরব ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশ স্বাক্ষর করেনি।
৮০টির বেশি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করলেও ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সৌদি আরবের মতো আঞ্চলিক শক্তির দেশগুলো ঘোষণাপত্রের ইউক্রেনের 'ভূখণ্ডের অখণ্ডতার' বিষয়ে একমত না হওয়ায় এতে স্বাক্ষর করেনি।
সম্মেলন শেষে গতকাল রোববার (১৬ জুন) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী সব দেশের যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না করাকে দুঃখজনক হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। তবে তিনি যৌথ ঘোষণাপত্রটিকে শান্তি অর্জনের জন্য প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে এখনো কিছু দেশ ভারসাম্য রক্ষা করে চলার চেষ্টা করলেও যেসব দেশ জাতিসংঘের সনদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সেসব দেশ পরবর্তীতে যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে পারবে।
গত শনিবার (১৫ জুন) সুইজারল্যান্ডের বুর্গেনস্টকে দুই দিনের ইউক্রেন শান্তি সম্মেলন শুরু হয় যাতে প্রায় ১০০ দেশ ও সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
চীনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও রাশিয়াকে সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কিন্তু রাশিয়ার উপস্থিতি ছাড়া এ ধরনের শান্তি সম্মেলন অর্থহীন— এমন মন্তব্য করে সম্মেলনে অংশ নেয়নি বেইজিং।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ দেশই ছিল ছিল যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা দেশের মিত্র। পশ্চিমা বিশ্বের কূটনীতিকরা সম্মেলনটি নিয়ে বেশ আশাবাদী। দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা ও এশিয়ারও বেশ কিছু দেশ সম্মেলনটিতে অংশ নিয়েছে।
তুরস্কের সাথে রাশিয়ার ভালো সম্পর্ক থাকায় যৌথ ঘোষণাপত্রে দেশটির স্বাক্ষর করা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ছিল। তুরস্ক রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবেও কাজ করছে।
আর্জেন্টিনা, ইরাক, কাতার ও রুয়ান্ডাও যৌথ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে।
সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেও স্বাক্ষর করেনি এমন দেশগুলোর মধ্যে ভারত, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সৌদি আরবের পাশাপাশি থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) অন্যতম।
সম্মেলন শেষে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, ইউক্রেনে শান্তি ফেরাতে সময় লাগবে কারণ পুতিন যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে আগ্রহী নয়।
এটি শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে দর-কষাকষি করার কোনো সম্মেলন ছিল না বলে জানিয়েছেন ভন ডার লেন।
গত শনিবার সম্মেলনটি শুরু আগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, পূর্ব ইউক্রেনের যে চারটি অঞ্চল রুশ সেনারা প্রায় দখল করেছে সেখান থেকে কিয়েভ সব সেনা প্রত্যাহার করলে এবং ইউক্রেন ন্যাটোর সদস্য হওয়ার আশা ছেড়ে দিলেই ইউক্রেনের সাথে শান্তি আলোচনা করতে পারে রাশিয়া।