বাতাস ও সূর্যের আলো থেকে উৎপাদিত বোতলজাত পানি আসছে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আসছে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে বাতাস থেকে উৎপাদন করা পানি। স্কাই ডব্লিউটিআর নামে এ উদ্ভাবনী উদ্যোগের পেছনে আছে অ্যারিজোনার কোম্পানি সোর্স। সৌরবিদ্যুৎচালিত 'হাইড্রোপ্যানেল'-এর প্রচারণা করাই এ উদ্যোগের উদ্দেশ্য। হাইড্রোপ্যানেলের মাধ্যমে অফগ্রিড পদ্ধতিতে সুপেয় পানি উৎপাদন করা যায়।
সোর্সের তৈরি করা এসব প্যানেল সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে ফ্যান চালু করে। এসব ফ্যান বাতাস থেকে জলীয় বাষ্প টেনে নেয়। ডেসিক্যান্ট নামক পানি শোষণকারী পদার্থ সেই জলীয় বাষ্প আটকে ফেলে। এরপর প্যানেলের সৌরশক্তি সেই জলীয় বাষ্পকে প্যানেলের ভেতরেই একটি সংগ্রহ এলাকায় ছেড়ে দেয়।
সোর্সের কর্মকর্তা কডি ফ্রিজেন নিউ সায়েন্টিস্টকে বলেন, 'আমরা মূলত বিশুদ্ধ, ডিস্টিল্ড পানি পাওয়ার জন্য বাতাসকে পাতিত করছি।'
ডিস্টিল্ড পানি এরপর একটি প্রেশারাইজড ট্যাংকে পাঠানো হয়। সেখানে পানির পিএইচের মাত্রা ঠিকঠাক করার পাশাপাশি ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো মিনারেল যোগ করা হয়।
প্রতিটি প্যানেল দিনে ৩ লিটার পর্যন্ত সুপেয় পানি উৎপাদন করতে পারে—যা একজন মানুসের দৈনিক গড় পানি পানের সমান। প্রচণ্ড গরম ও শুষ্ক পরিবেশেও এ প্রক্রিয়া কার্যকরভাবে কাজ করে বলে জানান ফ্রিজেন।
সোর্স ইতিমধ্যে বিশ্বজুড়ে ৫৬টি দেশে হাইড্রোপ্যানেল স্থাপন করেছে। এসব প্যানেল মাটিতে বা ছাদে যেকোনো জায়গায় স্থাপন করা যায়। তারপর ভবনের পানযোগ্য পানির পাইপের সঙ্গে সংযোগ দেওয়া যায়।
ফ্রিজেন বলেন, সহজে পানযোগ্য পানি পাওয়া যায় না, এমন অনেক জায়গায় বহু প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি প্যানেলের খরচ পড়ে প্রায় ৩ হাজার ডলার। এসব প্যানেলের সিংহভাগই কিনেছে বিভিন্ন দেশের সরকার অথবা উন্নয়ন ব্যাংক। তবে চাইলে যে-কেউ ব্যক্তিগতভাবে বাসভবনেও এসব প্যানেল স্থাপন করতে পারবেন।
ফ্লোরিডায় 'পানি ফার্ম'ও আছে সোর্সের। সেখানে দিনে ৩ হাজার লিটার পানি উৎপাদন করা হয়। ২০২৪-এর আগস্ট বা সেপ্টেম্বরে স্কাই ডব্লিউটিআর ব্র্যান্ডের অধীনে এখানে উৎপাদিত পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে কোম্পানিটির। এ পানি পুনর্ব্যবহারযোগ্য অ্যালুমিনিয়ামের ক্যান ও বোতলে বিক্রি হবে।
কোডি ফ্রিজেন বলেন, সম্ভাব্য ক্রেতাদেরকে হাইড্রোপ্যানেলের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই বোতলজাত পানি বিক্রির মূল উদ্দেশ্য। তাদের আশা, এ পানি দেখে মানুষ নিজেদের বাড়িতে স্থাপনের জন্য হাইড্রোপ্যানেল কিনবে।
আগামী বছরগুলোতে প্যানেলের দাম অনেকটা কমিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে সোর্সের, যাতে স্থানীয়ভাবে পানি উৎপাদন আরও সাশ্রয়ী করা যায়।