বেতন বৃদ্ধি ও বোনাসের দাবিতে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে স্যামসাং-এর কর্মীরা
মালিকপক্ষের সাথে বেতন এবং বোনাস নিয়ে চলমান বিরোধের কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ার স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের বৃহত্তম শ্রমিক ইউনিয়ন তিন দিনের ওয়াকআউটের পরে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে জানানো হয়েছে, এ সপ্তাহের শুরুতে স্যামসাং-এর সেমিকন্ডাক্টর বিভাগের ৬ হাজার কর্মী প্রাথমিকভাবে একটি ধর্মঘট শুরু করার পর বুধবার (১০ জুলাই) থেকে নতুন করে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।
ন্যাশনাল স্যামসাং ইলেক্ট্রনিক্স ইউনিয়ন (এনএসইইউ) এর ৩১ হাজার কর্মী, যারা স্যামসাং-এর দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মশক্তির প্রায় এক চতুর্থাংশ— তারা ১০ জুলাই থেকে একটি অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করবে বলে এনএসইইউ ঘোষণা দিয়েছিল। কোম্পানির ৫৫ বছরের ইতিহাসে এটি বৃহত্তম শ্রমিক ধর্মঘট।
ইউনিয়নের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আলোচনার মাধ্যমে দাবি মেনে না নিলে কোম্পানিকে 'অনুশোচনা করতে হবে'। ধর্মঘট যত দীর্ঘ হবে, কর্তৃপক্ষকে তত বেশি 'কোণঠাসা হতে হবে'। এনএসইইউ জানিয়েছে, তাদের 'জয় নিয়ে আস্থা আছে'।
বুধবার এক বিবৃতিতে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স জানিয়েছে, কোম্পানি 'ইউনিয়নের সাথে সুন্দর সমাধানে আসার জন্য আলোচনা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ'। পাশাপাশি কোম্পানি থেকে পণ্য উৎপাদন ব্যাহত হবে না বলেও জানানো হয়েছে।
তবে ইউনিয়ন নেতা সন উমক সিএনএনকে বলেছেন, "ধর্মঘটের কারণে বন্ধ থাকা কর্মকাণ্ড পুনরায় চালু করতে অনেক সময় লাগবে।"
বেতন নিয়ে স্বচ্ছতা এবং ভালো কাজের পরিবেশের দাবিতে গত জুনে ইউনিয়নের ডাকা একদিনের ধর্মঘটের মধ্য দিয়ে কর্মীদের সাথে কোম্পানির বিরোধের বিষয়টি প্রথমবার প্রকাশ্যে আসে।
স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স বিগত কয়েক বছরে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে কোভিড মহামারির সময় মেমরি চিপের ঘাটতি এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ইলেকট্রনিক্সের চাহিদা কমে যাওয়া।
তবে স্যামসাং নিজেদের মোবাইল ডিভাইসের চাহিদা বৃদ্ধির ব্যাপারে আশাবাদী, বিশেষ করে নতুন এআই-চালিত স্মার্টফোনের চাহিদা বাড়ার জন্য। গত সপ্তাহে স্যামসাং গত বছরের একই সময়ের তুলনায় দ্বিতীয়-ত্রৈমাসিক অপারেটিং মুনাফায় ১৫ গুণ বৃদ্ধি দেখতে পাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল।
স্যামসাং-এর কর্মীরা এরকম মুনাফার প্রতিফলন তাদের বেতন কাঠামোতেও দেখতে চান। ইউনিয়ন নেতা সন উমক বলেছিলেন, "কোম্পানি কর্মীদের সাথে ঠিক আচরণ করছে না।"
তিনি জানান, "কোম্পানির অপারেটিং মুনাফা অনেক বেশি হলেও কোম্পানি থেকে গত ১০ বছর ধরে খালি সংকটের কথাই বলা হচ্ছে। বোনাস সন্তোষজনকভাবে না বাড়ার কারণে কর্মীরা এখন বিরক্ত।"