বড়দিনের ব্যস্ততার মাঝেই 'ইতিহাসের সবচেয়ে বড়' ধর্মঘটে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যামাজন কর্মীরা
বেতন বৃদ্ধি, উন্নত কর্মপরিবেশ ও ট্রেড ইউনিয়ন গঠনসহ নানা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে অ্যামাজনের কর্মীরা। এবার আশানুরুরপ সাড়া না পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির যুক্তরাষ্ট্রের হাজার হাজার কর্মীরা বড়দিনের ব্যস্ততার মাঝেই ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
টিমস্টার ইউনিয়নের পক্ষ থেকে গতকাল (বুধবার) এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। সেখানে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে নিউইয়র্ক, আটলান্টা ও সান ফ্রান্সিসকোসহ শহরগুলিতে 'ইতিহাসের সবচেয়ে বড়' ধর্মঘটে যুক্ত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
টিমস্টারসের জেনারেল প্রেসিডেন্ট সিন এম ওব্রায়ান এক বিবৃতিতে বলেন, "ছুটির দিনে আপনার প্যাকেজ পৌঁছাতে বিলম্বিত হলে আপনি সেক্ষেত্রে অ্যামাজনের অতৃপ্ত লোভকে দায়ী করতে পারেন। আমরা অ্যামাজনকে আলোচনা করতে একটি স্পষ্ট সময়সীমা দিয়েছিলাম। তারা সেটি উপেক্ষা করেছে।"
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, "দৃষ্টিকটুভাবে মুনাফা অর্জনের দিকেই ঝুঁকে থাকা লোভী এক্সিকিউটিভদের শালীনতা ও সম্মান প্রদর্শনের সুযোগ ছিল। তবে তারা সেটি না করে বরং কর্মীদের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়েছে এবং এখন সেটার মূল্য পরিশোধ করছে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।"
নর্থ আমেরিকার অন্যতম বৃহত্তম ইউনিয়নগুলোর মধ্যে টিমস্টার্স অন্যতম। এতে অ্যামাজনের প্রায় ১০ হাজার কর্মী যুক্ত রয়েছে বলে দাবি করা হয়।
অ্যামাজনের মুখপাত্র কেলি নানটেল আল জাজিরাকে বলেন, "এক বছরেরও বেশি সময় ধরে টিমস্টার ইচ্ছাকৃতভাবে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। প্রতিষ্ঠানটি দাবি করে থাকে যে, তাদের সাথে অ্যামাজনের হাজার হাজার কর্মী ও ড্রাইভার যুক্ত আছে। কিন্তু এটা সত্য নয়। মিথ্যা প্রচার করার এটি আরও একটি পদক্ষেপ।"
কেলি নানটেল বলেন, "বাস্তবতা হচ্ছে, টিমস্টার অ্যামাজন কর্মচারী ও তৃতীয় পক্ষের চালকদের তাদের সাথে যোগ দেওয়ার জন্য সক্রিয়ভাবে জোর করেছে এবং হুমকি দিয়েছে যা বেআইনি।"
ওয়ালমার্টের পর অ্যামাজন হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাইভেট কর্মীবাহিনীর কোম্পানি। বহু বছর ধরেই কর্মীদের শোষণ করে অধিক মুনাফা লাভের দিকে ঝোঁক থাকার অভিযোগ রয়েছে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে।
অ্যামাজন আগেও বিবৃতিতে আন্দোলনকারীদের 'অপপ্রচারকারী' আখ্যায়িত করেছে। তারা দাবি করেছে, প্রতিষ্ঠানটির কর্মপরিবেশ আধুনিক ও নিরাপদ। তবে রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রে গুরুতর গুদাম দুর্ঘটনার ৫০ শতাংশ অ্যামাজনের কর্মক্ষেত্রে ঘটেছে।
'মেক অ্যামাজন পে' আন্দোলন ২০২০ সালে শুরু হয়। এটির লক্ষ্য হলো অ্যামাজনকে তার কর্মচারী, পরিবেশ এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ করতে বাধ্য করা।
অনুবাদ: মোঃ রাফিজ খান