পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে জামাত-শিবিরের লোকেরাই: কাউন্টার টেরোরিজমের প্রধান
কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, পুলিশের ওপর চালানো সাম্প্রতিক আক্রমণগুলোর পেছনে রয়েছে জামাত-শিবির।
জঙ্গি সন্ত্রাসীদের দমনের জন্য গঠিত পুলিশের এই বিশেষ ইউনিটের প্রধান সোমবার বিকেলে তাঁর কার্যালয়ে এ কথা বলেন।
তাঁকে সভাপতি করে পুলিশের ওপর চালানো সাম্প্রতিক হামলাগুলোর তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠিত হয়েছে।
কাউন্টার টেরোরিজমের প্রধান আরও জানালেন, “যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে যখন বিচার শুরু হয়, জঙ্গিরা এই বিচার বন্ধ করতে সক্রিয় ছিল। তখন ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ নামের প্ল্যাটফর্মটি যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছিল। এর ফলে জামাত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে নানাভাবে যুক্ত তাদের কর্মী ও সদস্যরা টার্গেট করে কিছু ব্লগার ও ব্যক্তিকে হত্যা করতে শুরু করে। এমনকি কিছু জঙ্গি গ্রুপ তথাকথিত ব্লগার বা নাস্তিকদের হত্যা করার ঘোষণা দেয়। তখন ‘গণজাগরণ মঞ্চ’ তুলে নিতে হয়।”
দৃশ্যত, এর সুবিধাভোগী হয় জামাত-শিবির।
মনিরুল ইসলাম মনে করেন, এভাবে ব্লগার ও নাস্তিকদের টার্গেট করে হত্যা করতে করতেই ওদের শেকড়বাকড় গজায়।
বাংলাদেশের জঙ্গিরা ইতহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় ২০১৬ সালের জুলাইতে, হলি আর্টিজানে।
মনিরুল জানালেন, “প্রতিটি আক্রমণের বিষয়ে তদন্ত করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং আমরা জানতে পেরেছি, নব্য-জেএমবিরা এসব করছে। সাবেক জমিয়াতুল মুজাহেদিনরা এসেছে জামাত-শিবির থেকে।”
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান আরও জানালেন, কিছু বেপথু তরুণ আর জামাত-শিবিরের পুরনো কর্মীদের পৃষ্ঠপোষকতায় এখন পুলিশের উপর আক্রমণ চলছে। ওরা ওদের নেতাদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে চাইছে।২০১৪ ও ২০১৫ সালের পেট্রোল বোমা হামলাগুলোর পর জামাত-শিবিরের অনেক কর্মীকে জেলে যেতে হয়। কিন্তু তাদের অনুসারী ও সদস্যরা এরপর থেকে পুলিশের উপর আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে।
এর আগে, ৩১ আগস্ট রাতে এলজিআরডি মন্ত্রীর গাড়ি লক্ষ্য করে সন্ত্রাসীদের হাতবোমা নিক্ষেপের পর রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয় কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের প্রধান ও ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করে।
২০১৬ সালে গুলশান হামলার পর সাঁড়াশি অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা জঙ্গিদের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার দাবি করা হলেও সম্প্রতি ঢাকায় পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা হামলার কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে।
এসব ঘটনার পর মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের নামে দায় স্বীকারের বার্তা এলেও তা নাকচ করে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশের জঙ্গিরা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে।